বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। দেশের অস্তিত্ব থাকবে কি না? দেশের স্বাধীনতা টিকবে কি না? দেশে গণতন্ত্র থাকবে কি না এই মুহূর্তে সেটা অনিশ্চিত।’
শেখ হাসিনা আমেরিকা থেকে শূন্য হাতে দেশে ফিরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, 'বহু চেষ্টা করেও ভিসা নীতি বাতিল করতে পারেনি।'
আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামমুখী লংমার্চে অংশ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের কালাকচুয়া বাজারে অস্থায়ী মঞ্চে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'সরকার দেশমাতা খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে জেলখানায় আটকে রেখেছে, চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দিচ্ছে না। কারণ তারা জানে খালেদা জিয়া জনগণের কাছে গেলে এ সরকার একদণ্ডও টিকতে পারবে না। সরকার আমাদের নেতা তারেক জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে নির্বাসিত করে রেখেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই মুহূর্তে দেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। দেশের অস্তিত্ব থাকবে কি না? দেশের স্বাধীনতা টিকবে কি না? দেশে গণতন্ত্র থাকবে কি না এই মুহূর্তে সেটা অনিশ্চিত। এ মুহূর্তে এক দফা দাবি শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচন নয়। ২০১৮ সালে আমরা ভোট দিতে পারিনি, আপনারাও ভোট দিতে পারেননি।'
ফখরুল বলেন, 'সরকার উন্নয়ন করেছে বলে; কিন্তু এই ব্রিজ, ফ্লাইওভার, ট্যানেল করেছে জনগণের উন্নয়নের জন্য? আজকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তর করবে। এই পারমাণবিক রাসায়নিক এত ভয়াবহ, যা মাইলের পর মাইল ধ্বংস করে ফেলে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বছরের পর বছর সেটা ভোগায়। হিরোশিমায় তাই হয়েছিল, চেরনোবিলেও একই ঘটনা ঘটেছিল।'
সরকার এগুলোকে উন্নয়ন বলে, আসলে এর নাম করে অর্থ আত্মসাতের জন্যই এগুলো করেছে বলেন, মির্জা ফখরুল।
অবিলম্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামমুখী লংমার্চে অংশ নিয়ে কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মী কৃুমিল্লার বুড়িচং থানার কালাকচুয়ায় সমবেত হন। সেখানে অস্থায়ী মঞ্চে আয়োজত সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকারের দেহটা আছে, কিন্তু প্রাণ নেই। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এরা এখন পাগল হয়ে গেছে। এদের হাতে আর সময় নেই। অল্প সময়ের মধ্যেই বিদায় নিতে হবে। পতন সামনে দেখে পাগলের মতো আবোলতাবোল বলছে। ভোট চোর এ সরকারের কোনো রক্ষা নেই।
আমির খসরু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে গিয়ে অনেকের পায়ে ধরেছে। টিকে থাকার জন্য ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিশ্ব বিবেক তাকে আর পাত্তা দেয়নি। আমরা '৭১ সালে একবার মুক্তিযুদ্ধ করেছি। এবার ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আরেকবার মুক্তিযুদ্ধ করব। অবৈধ ভোট চোর হাসিনা সরকারের পতন নিশ্চিত করব।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী জসিম উদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পরে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে যাত্রা শুরু করে বিএনপির রোডমার্চ। এতে হাজার হাজার যানবাহন নিয়ে রোডমার্চে অংশগ্রহণ করেন নেতাকর্মীরা। এ সময় নেতাকর্মীরা দলীয় সংগীত এবং নানা স্লোগান দিয়ে মুখরিত করেন গোটা এলাকা।