image

গত ০৬ এবং ০৭ই মার্চ, ২০২৪ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পূর্বাপর ঘটনা প্রবাহ, নজির বিহীন ভোট জালিয়াতী, কারচুপি, সম্পাদক পদে একজন প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কর্তৃক মনোনীত সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজল এর বিবৃতি। 

০৯ মার্চ ২০২৪, শনিবার

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

আসসালামু আলাইকুম।

আমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। আপনারা জানেন, গত ০৬ এবং ০৭ই মার্চ, ২০২৪-এ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী সিনিয়র এ্যাডভোকেট, ব্যারিস্টার এ.এম. মাহবুব উদ্দীন খোকন ও সম্পাদক পদপ্রার্থী সিনিয়র এ্যাডভোকেট, ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস (কাজল) এর নেতৃত্বাধীন ১৪ জন প্রার্থী একক প্যানেল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অন্যদিকে সিনিয়র এ্যাডভোকেট, জনাব আবু সাঈদ সাগর ও সিনিয়র এ্যাডভোকেট, জনাব শাহ মঞ্জুরুল হকের নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের অন্যতম নেতা ও সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ নাহিদ সুলতানা যুথী সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সভাপতি পদে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আরেক নেতা জনাব মোঃ খলিলুর রহমান বাবলু (এম.কে. রহমান) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জনাব ড. ইউনুস আলী আকন্দ ও সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী জনাব ফরহাদ উদ্দিন ভূইয়া ও কোষাধ্যক্ষ পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৪টি পদের বিপরীতে মোট ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

আপনাদের নিশ্চয়ই বিগত ২০২২ ও ২০২৩ সালের সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের কলঙ্কজনক ঘটনার কথা স্মরণে আছে। ২০২২ সালে সম্পাদক পদে আমি, মোঃ রুহুল কুদ্দুস (কাজল) বিজয়ী হলেও নির্বাচনের ৪২ দিন পর সমিতির ৩য় তলায় অবস্থিত কনফারেন্স রুম ভেঙ্গে পুলিশ ও বহিরাগতদের সহায়তায় তথাকথিত ভোট পুনঃগণনার নামে সম্পাদক পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় এবং সম্পাদক অফিস জবরদখল করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১৫ ও ১৬ই মার্চ নির্বাচনের সময়ও পুলিশ ও বহিরাগতদের দিয়ে আমাদের প্রার্থী, ভোটার, সাংবাদিকদেরকে বেধড়ক মারধর করে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে পুনরায় সমিতি নিজেরা জবরদখল করে রাখে। ২০২৩ সালে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ নিজেদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করে। এ সবই আওয়ামীলীগের অতীত চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

বর্তমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অবৈধ দখলদার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। এতদসত্ত্বেও আমাদের প্রত্যাশা ছিল, বিগত দুই বছরের কলঙ্কজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবছর সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে ঘটবেনা। এমনকি অবৈধ দখলদাররাও অবলীলায় নিজেদের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এবছর অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নানাভাবে প্রার্থীদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু ঐ যে, চিরাচরিত প্রবাদ, "চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী" এটি আওয়ামীলীগের মজ্জাগত। গত ২৮ এবং ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনেও তারা এটা প্রমাণ করেছে। একারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই আমরা এদের কার্যক্রমের উপর সতর্কদৃষ্টি রাখছিলাম। নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতিটি পদে পদে কিভাবে ভোট চুরি/ডাকাতি করে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেওয়া যায় সেটাই ছিল তাদের প্রানান্তকর চেষ্টা। অতীতে দল নিরপেক্ষ ব্যক্তি/উভয় রাজনৈতিক মতাদর্শের সমসংখ্যক সদস্যদের নিয়ে নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করা হলেও এবার একতরফাভাবে আওয়ামীলীগের একান্ত অনুসারীদের দিয়ে নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করা হয়। মোট ৬ সদস্যের নির্বাচন সাব-কমিটির মধ্যে ৫ জনই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। দু'জন আবার সরকারের বেতনভুক্ত ডেপুটি এ্যাটর্নী জেনারেল। ২০২২ সালে সম্পাদক পদে ফলাফল ডাকাতি ও ২০২৩ সালের তথাকথিত ভোট ডাকাতির সঙ্গে তারা সরাসরি জড়িত। কো-অপ্টকৃত সদস্যদের অধিকাংশ আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক কর্মি ও সরকারের বেতনভুক্ত এ্যাটর্নী জেনারেল অফিসের আইন কর্মকর্তা। সরকার দলীয় আদেশ নির্দেশ প্রতিপালনই তাদের একমাত্র কাজ। এ পরিস্থিতিতে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী জনাব এ.এম. মাহবুব উদ্দীন খোকন ও ড. ইউনুস আলী আকন্দ, সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৩ জন প্রার্থী আমি, মোঃ রুহুল কুদ্দুস (কাজল), নাহিদ সুলতানা যুথী ও জনাব ফরহাদ উদ্দিন ভূইয়া নির্বাচন সাব-কমিটির ২ জন সদস্য এবং কো-অপ্টকৃত ১৭ জন সদস্যদের বিরুদ্ধে গত দু'বছরের ন্যাক্কার জনক ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে তাদেরকে নির্বাচন সাব-কমিটি থেকে অপসারণের জন্য গত ০৩/০৩/২০২৪ ইং লিখিতভাবে দাবি জানাই। এমনকি ০৪/০৩/২০২৪ ইং তারিখ অনুষ্ঠিত প্রার্থী পরিচিতি সভায়ও প্রার্থীগণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাদেরকে নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটি থেকে অপসারণের দাবি জানান। নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ আবুল খায়ের প্রার্থীদেরকে বারংবার আশ্বস্ত করলেও তাদেরকে দিয়েই নির্বাচন পরিচালনার কাজ করতে থাকেন।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

গত ০৬ই মার্চ, ২০২৪ ছিল ভোট গ্রহণের প্রথম দিন। ভোট গ্রহণের শুরুতেই বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে ভোট গ্রহণ শুরু করার চেষ্টা করলে প্রার্থীরা প্রতিবাদ জানান। কিন্তু প্রার্থীদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও তাদেরকে দিয়ে নির্বাচনী কাজ শুরু করেন। যার ফলাফল একেবারে প্রথম থেকেই দৃশ্যমান হতে থাকে। ভোটার স্লিপ দেওয়া, ব্যালট প্রদান ও ব্যালট বাক্স ভর্তির সব কাজে আওয়ামীলীগের কর্মিরা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। ভোটার নন এমন ব্যক্তিদেরকে ব্যালট দিয়ে দেন। একই ব্যক্তিকে একাধিক ব্যালট সরবরাহ করেন। অডিটরিয়ামের পিছনের গেট দিয়ে অবৈধ ব্যালট বাক্সে ঢুকানো হয়। নির্বাচন সাব-কমিটির আমাদের দলীয় কো-অপ্ট সদস্যরা প্রতিবাদ করলে সরকারি দলের রাজনৈতিক কর্মিরা মারমুখি আচরণ করে। নির্বাচন চলাকালে প্রার্থীরা অডিটরিয়ামের বাহিরে অবস্থান করায় ভিতরের অবস্থা তাৎক্ষনিকভাবে অবলোকন করতে পারেননি। কিন্তু প্রথমদিনের মধ্যাহ্ন বিরতির সময়ে আমাদের প্রার্থীরা নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন এবং এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর যেন না ঘটে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। নির্বাচনের দু'দিন আমি, সম্পাদক প্রার্থী মিডিয়ার সামনে ভোট গ্রহণের নানা অনিয়ম এবং ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের দাপটের বিষয়টি মিডিয়ার সামনে একাধিকবার উপস্থাপন করি। এমন অবৈধ প্রক্রিয়ায় দু'দিনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। নির্বাচন সাব-কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী দু'দিনে ৫৩১৯ ভোট কাস্টিং হয়।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

নির্বাচন সাব-কমিটির পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যালট পেপার গোছানো (সর্টিং) ও ভোট গণনা শুরুর কথা ছিল। রাত ১১ টার পরে সমিতির অডিটরিয়ামে প্রথমে সদস্য পদের ব্যালট বাক্স উন্মুক্ত করে সর্টিং শুরু হয়। এ সময়ই ভোট জালিয়াতি ও নানা অনিয়মের বিষয়টি প্রমান হতে শুরু করে। একাধিক ব্যালট একত্রে ভাজ করা অবস্থায় পাওয়া যায়। সদস্য পদের হলুদ রঙ্গের ব্যালটের সঙ্গে অফিস বিয়ারারের গোলাপী রঙ্গের শতাধিক ব্যালট পাওয়া যায়। ব্যালট গণনাকালে সদস্যপদে ১৫০টি অতিরিক্ত ব্যালট পাওয়া যায়। অডিটরিয়ামে উপস্থিত আমি, সম্পাদক প্রার্থী মোঃ রুহুল কুদ্দুস (কাজল), নাহিদ সুলতানা যুথী ও জনাব ফরহাদ উদ্দিন ভূইয়া তাৎক্ষনিকভাবে ঘোষিত ভোটের অতিরিক্ত ১৫০টি ব্যালটের অস্তিত্ব কিভাবে এলো তা নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধানের কাছে জানতে চাই। তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি। এ অবস্থায় আমরা ৩জন সম্পাদক প্রার্থী রাত ১:০৮ মিনিটে নির্বাচন সাব-কমিটি আহ্বায়ক বরাবরে যৌথভাবে এক লিখিত আবেদন করে দপ্তরে রক্ষিত ব্যালট বাক্সের মুড়ির সঙ্গে ব্যালট পেপার মিলিয়ে ভুয়া ব্যালট বাতিল করে প্রকৃত ব্যালট গণনা পূর্বক ফলাফল ঘোষণার দাবি জানাই (কপি সংযুক্ত)। নির্বাচন সাব-কমিটি প্রধান বিষয়টি আমলে নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে পুনরায় আশ্বস্ত করেন। উল্লেখ্য, নির্বাচনের দু'দিন ব্যালট বাক্সে ব্যালট ঢুকানোর সার্বক্ষনিক দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল চিহ্নিত একজন সরকারী সহকারী এ্যাটর্ণী জেনারেল। আপত্তিকৃত ১৯ জন নির্বাচন সাব-কমিটির সদস্যের মধ্যে তিনি অন্যতম। তার বিরুদ্ধে একাধিকবার আপত্তি করলেও তাকে তার অপকর্ম থেকে সরানো যায়নি।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

অফিস বিয়ারার পদের গোলাপী রঙ্গের ব্যালট সর্টিং করার সময় ধরা পড়ে আরেক ভয়াবহ ঘটনা। ৩টি করে ব্যালট একত্রে ভাজ করা অবস্থায়ও পাওয়া যায়। নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধান এমন ব্যালটগুলো পাওয়া গেলে তার কাছে জমা দেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু যেহেতু সর্টিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ৩০ জন সদস্যের অধিকাংশই সরকারী দলের রাজনৈতিক কর্মি ও বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা, তাদের হাতে এমনটি ধরা পড়লেও তাদের এসাইনমেন্ট অনুযায়ী সেগুলো উল্লেখ করেননি। আমাদের দলীয় দু'জন নারী সহকর্মী একাধিকবার এমন ব্যালটের সন্ধান পান এবং নির্বাচন সাব-কমিটি প্রধানের কাছে জমা প্রদান করেন। এমন প্রতিটি ব্যালটেই আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীদের প্যানেলে ভোট দেওয়া ছিল। এছাড়া অফিস বিয়ারার পদে ঘোষিত ভোটের অতিরিক্ত ৪০টি ব্যালট পাওয়া যায়। একথা সহজে বোধগম্য যে, ব্যালট জালিয়াতি করে ঘোষিত ভোটের অতিরিক্ত ভোট ব্যালট বাক্সে ঢুকানো হয়েছে। এছাড়া সদস্য পদ এবং অফিস বিয়ারার পদের ব্যালটের পার্থক্যও প্রমান করে যে, নির্বাচনে কারচুপি আর ক্ষমতাসীনদের বিজয়ী করার জন্যই এ আয়োজন।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

নানা নাটকিয়তার পর এক পর্যায়ে দু'টি টেবিলে ভোট গণনা শুরু হয়। কিন্তু আওয়ামী সমর্থক সম্পাদক পদপ্রার্থী জনাব শাহ মঞ্জুরুল হক সহ আওয়ামীলীগ প্যানেলের সদস্যরা এতে আপত্তি জানান এবং পরদিন ভোট গণনার জন্য দাবি জানান। জনাব শাহ মঞ্জুরুল হক নিজেও ভোট গণনা বন্ধের দাবি জানান। বাকি ৩জন সম্পাদক প্রার্থী পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণার জন্য নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধানের কাছে অনুরোধ জানাতে থাকেন। এক পর্যায়ে ক্ষমতাসীন দলের কিছু সংখ্যক বহিরাগত অডিটরিয়ামে প্রবেশ করে এবং সেখানে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তারা সেখানে উপস্থিত আইনজীবীদের মারধর করে। কিছুক্ষণ পর সাব-কমিটি প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ আবুল খায়ের সম্পাদক পদে আওয়ামীলীগ নেত্রী এ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথী কে বিজয়ী ঘোষণা করে অডিটরিয়াম ত্যাগ করেন। ব্যালট পেপার সম্বলিত বাক্সগুলি বহিরাগতরা অডিটরিয়াম থেকে বাহিরে বের করে নিয়ে চলে যায়। এ ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে ০৮ই মার্চ সকাল ০৮ টার দিকে আমাদের দলীয় প্রার্থীরা অডিটরিয়াম ছেড়ে চলে আসেন এবং তাৎক্ষনিকভাবে নির্বাচন নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করেন।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এই যে, ০৮ই মার্চ ভোরবেলা অডিটরিয়ামের ভিতরে ঘটা নৈরাজ্যকর ঘটনা আওয়ামীলীগের দু'জন প্রার্থী জনাব শাহ মঞ্জুরুল হক ও নাহিদ সুলতানা যুথী'র সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও উক্ত ঘটনায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী, আমি মোঃ রুহুল কুদ্দুস (কাজল) ও আরও তিনজন আইনজীবী নেতাকে আসামী করে শাহবাগ থানায় একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে, আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের বাড়িতে/চেম্বারে হানা দেওয়া হচ্ছে। এমন আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে যে, কোন আইনজীবী সুপ্রীম কোর্টে যেতে পারছেন না। এমন একটা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে গত ২০২২ এবং ২০২৩ সালের সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচন ও সদ্য সমাপ্ত ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের ন্যায় নিজেদের পছন্দ মত ব্যক্তিদের নাম বিজয়ী ঘোষণা করা হতে পারে। অথচ ইতোমধ্যেই সম্পাদক পদে ভোট গণনা ছাড়াই আওয়ামীলীগের একজন প্রার্থীকে সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধান চাপে পড়ে উক্ত ঘোষণা দিয়েছেন মর্মে একটি বিবৃতি আমার দৃষ্টিতে এসেছে। আমার আশংকা পাল্টা চাপে তিনি এবার আওয়ামীলীগের অপর প্রার্থীকে সম্পাদক পদে নির্বাচিত ঘোষণা করতে পারেন। এরকম মেরুদন্ডহীন ও দলকানা ব্যক্তিদের দ্বারা যেকোন কিছু করা সম্ভব।

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,

দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে থাকতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ যে সকল উপায় অবলম্বন করে থাকে তার সব কিছুই তারা সদ্য সমাপ্ত সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে প্রয়োগ করেছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠনও তাদের কালো থাবা থেকে নিষ্কৃতি পেলোনা। এ পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, মাননীয় প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে একটি স্বাধীন নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠান জরুরী। তা না হলে বিচারবিভাগের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাহীনতা বাড়তে থাকবে।

আপনাদেরকে ধন্যবাদ।

মোঃ রুহুল কুদ্দুস (কাজল)

ব্যারিস্টার-এট-ল'

সিনিয়র এ্যাডভোকেট

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।

সম্পাদক পদপ্রার্থী

ব্যালট নং- ২।

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী নির্বাচন, ২০২৪-২৫।

রিলেটেড প্রোগ্রাম এবং প্রেস রিলিজ

আরো দেখুন