০৫ অক্টোবর ২০২৩
বিএনপি’র স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রফিকুল ইসলাম এর বিবৃতি
“গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা দেশের জনগণ তখন ঔষধের দাম বৃদ্ধি করে দেশের জনগনকে এক নির্মম পরিস্থিতিতে নিয়ে যাচ্ছে এই অবৈধ সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যমতে চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৪% ঔষধের পেছনে খরচ হয়, সেই ঔষধের দাম বৃদ্ধি করে যেন নির্মম এক প্রহসনের আয়োজন করলো জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার।
২০২২ সালে কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষনা ছাড়া শুধুমাত্র ঔষধ কোম্পানিগুলোর সুপারিশে ২০টি জেনেরিকের ৫৩টি ঔষধের দাম বৃদ্ধি করে ঔষধ প্রশাসন, যা ছিলো নজিরবিহীন। সে সময় প্যারাসিটামল, হৃদরোগ, ব্যাথানাশক ও গ্যাস্ট্রিকের ঔষধের দাম ৫০—১৩৪% শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
ঔষধের দাম বৃদ্ধির এই রেশ কাটতে না কাটতেই অতি সম্প্রতি দেশের শীর্ষ ছয় প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত ২৩৪টি জীবন রক্ষাকারী ঔষধের দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। যার সুবিধা নিচ্ছে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। যার ফলে ঔষধের মূল্য প্রকৃত মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি খরচ দিয়ে কিনতে হিমশিম খাচ্ছে জনগণ।
মারাত্মক ডেংগুর এই প্রকোপের সময় ঔষুধের এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি চরম বিপর্যয় নিয়ে আসছে। একই সাথে জীবন রক্ষাকারী স্যালাইনের মূল্যবৃদ্ধি অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে স্যালাইনের সংকট নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঔষধ প্রশাসন এসব ক্ষেত্রে নীরব। শীর্ষ ছয় কোম্পানির মালিকানা দেখলেই বোঝা যাবে কার স্বার্থ রক্ষার্থে এই দাম বৃদ্ধি।
এভাবে হুট করে দামবৃদ্ধির কারণে অনেকেই মাঝপথে ঔষধ সেবন বন্ধ করে দিচ্ছে, ফলে নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কোর্স সম্পন্ন না করে এন্টিবায়োটিক বন্ধ করলে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স তৈরি হচ্ছে যা শীর্ষ ১০টি জনস্বাস্থ্য হুমকির একটি। একই সাথে ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগের ঔষধের দামবৃদ্ধিতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। যারা দীর্ঘ মেয়াদি রোগে ভুগছেন নিয়মিত ঔষধ খাওয়ার জন্য তাদের মাসিক খরচ ২—৪ হাজার টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিত্যনৈমিত্তিক পণ্য কেনা নিয়ে যখন নাভিশ্বাস তখন জীবন রক্ষাকারী ঔষধ কেনাটা সাধারন মানুষের জন্য বিলাসিতায় পরিণত হয়েছে।
১৯৮২ সালের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১১ (১) ধারা অনুযায়ী স্পষ্ট বলা আছে "সরকার অফিসিয়াল গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ঔষুধের দাম নির্ধারণ করতে পারবে।" অথচ এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে ২০২২ সালেই ঔষুধ প্রশাসন দাম বাড়িয়েছে ২ বার।
এভাবে দেশের প্রতিটি খাত ধ্বংসের সম্মুখীন। চিকিৎসা মৌলিক অধিকার, তাও আজ ক্ষুন্ন হচ্ছে। নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত এই সরকার কোনভাবেই দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে এক চরম দূর্যোগের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
এভাবে চলতে পারে না। অবিলম্বে স্বাস্থ্যখাতে এই বেহাল দশার সাথে জড়িত অবৈধ সরকারের কুশীলবদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে।”
বার্তা প্রেরক
(মুহম্মদ মুনির হোসেন)
সহ—দফতর সম্পাদক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপি