১৯ জুন ২০২৩
বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেনঃ-
বাণী
“আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস। প্রতি বছর জুন মাসের ২০ তারিখ জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব শরণার্থী দিবস পালিত হয়। ২০০১ ইং সাল থেকে প্রতি বছর জুন মাসের ২০ তারিখ বিশ্বজুড়ে শরণার্থীদের দু:সহ পরিস্থিতির প্রতি আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের সচেতন উপলব্ধি বৃদ্ধির জন্য এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও আজ এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। পৃথিবীর দেশে দেশে উদ্বাস্ত সমস্যা আজও ভয়াবহ ও অমানবিক। জাতিগত সহিংসতা, ধর্মীয় উগ্রতা ও রাজনৈতিক আদর্শগত কারণে সমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তাহীনতাই এর প্রধান কারণ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এই দিবসটির প্রতি পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন এবং বিশ্বব্যাপী নিজ দেশে জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত মানুষদের মর্যাদা ও স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রতি সক্রিয় সমর্থন অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষনা করছে। নিজ দেশ থেকে উচ্ছেদ হওয়া শরণার্থীরা মানুষ হিসেবে মানবাধিকার হরণের শিকার হয়ে ভিন্ন দেশে আশ্রয় ও ক্ষুধা নিবৃত্তির সন্ধান করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশীদেরও সেই করুণ অভিজ্ঞতা আজও আমাদের স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি।
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শরণার্থী শিবির কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে অবস্থানরত প্রায় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের। তারা নিপীড়ণের শিকার হয়ে নিজ দেশের আবাস ছেড়ে বাংলাদেশে শরণার্থী হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের সাধ্যমতো প্রচেষ্টা নিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটি মানবতার একটি বিরল দৃষ্টান্ত। তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দিতে সরকারের কোন কার্যকর উদ্যোগ নেই।
জীবন-ধারণের উপকরণসহ তাদেরকে যথাযোগ্য মর্যাদায় নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতি সহযোগিতার আহবান জানাচ্ছি। আমি আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে বিশ্বের সকল শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনসহ তাদের প্রতি পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করছি।”
বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেনঃ-
বাণী
আজ ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবসে আমি বিশ্বের সকল শরণার্থীদের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার লড়াইয়ের প্রতি আন্তরিক সংহতি জ্ঞাপন করছি। বর্তমানে বিশ^জুড়ে রেকর্ড সংখ্যক প্রায় ১০ কোটি মানুষ বাস্তচ্যুত অবস্থায় রয়েছে। বিশ্ব নাগরিকদের সহজাত কিছু অধিকার রয়েছে, যেমন-মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য আশ্রয়, নিরাপত্তা এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার স্বাধীনতাসহ মানবিক মর্যাদা। বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে-যা খুবই আতঙ্কজনক। শরণার্থীরাও বিভিন্ন দেশে ক্ষুধা ও বেকারত্বের তাড়নায় অপরাধের সাথে জড়িত হওয়ার কারণে স্থানীয় সংস্কৃতির জন্য হুমকি হয়ে পড়ায় নতুন নতুন সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে। সুতরাং শরণার্থীরা নিজ দেশ থেকে বিচ্যুত হলেও আশ্রয় ও নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জগুলো বিদ্যমান থেকেই যাচ্ছে। সুতরাং বিশ্ব শরণার্থী দিবসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরণার্থীদের মানুষ হিসেবে টিকে থাকা ও তাদেরকে মানবতার চোখে দেখার বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপরই বর্তায়। বিশ্ব শরণার্থী দিবসটি আমাদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ এজন্য যে, বাংলাদেশ বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের নানা ধরণের দুর্যোগ যেমন ক্ষুধা, আবাস, বিভিন্ন রোগের প্রাদূর্ভাব ইত্যাদি মোকাবেলায় অনন্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
নিজ মাতৃভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া এই রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশী জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এদেরকে নাগরিক হিসেবে মর্যাদা দিয়ে নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারকে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাসহ বিশ্বের সকল শরণার্থীদের সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে যেতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমি বিশ্ব শরণার্থীদের প্রতি সমব্যাথী এবং তাদের নিজ দেশে মাথা উঁচু করে ফেরার প্রত্যাশা করছি।
(এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী)
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।