সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির নির্বাচনে ভোটের এক দিন আগে নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মনসুরুল হক চৌধুরী ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করার পর। আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের একতরফা ভোট করার চেষ্টায় বাঁধা দেয়ায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের উপর পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে একতরফা নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা।
এর আগে দুই পক্ষই ঐকমত্যের ভিত্তিতে মো. মনসুরুল হক চৌধুরীকে আহ্বায়ক হিসেবে মেনে নিয়েছিল যদিও এর আগে মনসুরুল হক চৌধুরী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন করে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
আইনজীবী জেড আই খান পান্না প্রথম আলোকে বলেন, মনসুরুল হক চৌধুরী একজন দায়িত্ববান ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। গুরুতর কোনো ঘটনা না ঘটলে তাঁর পদত্যাগ করার কথা নয়। নিশ্চয়ই তাঁর সঙ্গে এমন কিছু হয়েছে, যে কারণে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
মনসুরুল হক পদত্যাগ করলে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা নির্বাচন পরিচালনার উপকমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মো. মনিরুজ্জামানকে মনোনীত করেন। এরপর পরই সেদিন বিএনপি–সমর্থিত আইনজীবীরা এ এস এম মোকতার কবির খানকে আহ্বায়ক মনোনীত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, আওয়ামী লীগ মনোনীত আহ্বায়ক নির্বাচনের কার্যক্রম শুরুর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাতে ব্যালট পেপারে সই করতে সমিতির তিনতলার সম্মেলনকক্ষে যান। এতে আপত্তি জানান বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এ নিয়ে হইচই, হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এই অবস্থায় পুলিশ আকস্মিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বেধরক লাঠিচার্জ করে বিএনপিপন্থী আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের সেখান থেকে বের করে দেয়।
পুলিশের মারধরে আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সমিতির বর্তমান সভাপতি, সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন অংশের মনোনীত উপকমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোট গ্রহণ চলে।
আহত সাংবাদিকদের মধ্যে এটিএন নিউজের সাংবাদিক জাবেদ আখতার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার শিকার অন্যরা হলেন প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক শুভ্র কান্তি দাশ, জাগো নিউজের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ফজলুল হক মৃধা, আজকের পত্রিকার এস এম নূর মোহাম্মদ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জান্নাতুল ফেরদাউস, বৈশাখী টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন ইব্রাহিম হোসেন, এটিএন বাংলার ক্যামেরা পারসন হুমায়ুন কবির ও মানবজমিন–এর আবদুল্লাহ আল মারুফ।