image

 বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্র-জনতার সফল বিপ্লব ব্যর্থ করতে পরাজিত শত্রুরা চক্রান্ত করছে। তিনি এ চক্রান্ত প্রতিরোধে বাংলাদেশের আপামর জনগণকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বনানী করবস্থানে কোকোর কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন এবং কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এ আহ্বান জানান।

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার প্রত্যাশা, দেশে প্রতি বিপ্লবের যে আশঙ্কা আছে, সেই আশঙ্কা থেকে দেশকে মুক্ত করবার জন্য অত্যন্ত সজাগ থেকে, রাস্তায় থেকে পতিত স্বৈরাচারের অশুভ চক্রান্তকে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

‘শেখ হাসিনা রোববার ভারতের একটি গণমাধ্যমে বলেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ দিতে রাজি হননি বলেই তাকে ক্ষমতাচ্যূত করা হয়েছে’ এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিবের মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার এই বক্তব্য বাকোওয়াজ। নিজে যখন ব্যর্থ হন, তখন অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো তাদের একটা বৈশিষ্ট্য। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা ছিলো ছাত্র-জনগণ-নাগরিকের একটা স্বতস্ফূর্ত গণজাগরণ, সে গণজাগরণকে সুসংহত করাই আমাদের একমাত্র কাজ।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলুন, অন্যান্যরা বলুন সবাই এখন এটাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে। জনগণের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। সকলে ঐক্যবদ্ধ থেকে এই যে মুক্তি হয়েছে, এই যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, তাকে সুসংহত করার জন্য কাজ করুন।’

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবেদন ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট প্রোপাগান্ডা। তিনি বলেন,‘এটা হচ্ছে ফেইক প্রোপাগান্ডা। শিক্ষার্থীদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সৃষ্ট বাংলাদেশের গণজাগরণ এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সংঘঠিত অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার জন্য, ব্যর্থ করার জন্য এবং নব গঠিত অন্তর্র্বতী সরকারকে ব্যর্থ করার লক্ষ্যে তারা এই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্ব জনমত এটা বিশ্বাস করবে না।’ 

এ সময় মির্জা ফখরুল নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা আশা প্রকাশ করছি, নতুন অন্তর্বতীকালীন সরকার একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হবে।’ অতি দ্রুত নির্বাচনের জন্য একটা ক্ষেত্র তৈরি করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘সব বিপদকে কাটিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটা মুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা (অন্তর্বতীকালীন সরকার) একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন, সে-নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।’

এছাড়াও বিএনপি মহাসচিব বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতে আরাফাত রহমান কোকোর অবদান তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করব, অন্তর্র্বতীকালীন সরকার সমর্থ হবে বাংলাদেশের ক্রীড়া খাতকে সঠিকভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং এ ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করব।' বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের অবদান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ বিএনপিনহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ত্যাগ স্বীকার করেছে। এই সময়ে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছে এবং আজকে এই আন্দোলনে তাদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গৌরবান্বিত। তাই আমি অন্তর্র্বতী সরকারকে অনুরোধ করব, সমস্ত বিপদ কাটিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি মুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।'

উল্লেখ্য, আরাফাত রহমান কোকো ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মারা যান।