image

দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণেই ‘ধনী-গরিবের বৈষম্য ক্রমেই বাড়ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, আজ সবার উন্নয়ন করার কথা চিন্তা করলে গণতন্ত্র ছাড়া কোনো পথ নাই। আর গণতন্ত্র নাই বলেই আজকে দেশের বিপুল সংখ্যগরিষ্ঠ মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিষ্পেষিত আর হাতে গোনা কিছু মানুষ প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার বাড়ি কিনছে।


বুধবার সকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই অভিযোগ করেন।


তিনি বলেন, দেশের শতকরা ৫ ভাগ মানুষ দেশের বিপুল পরিমাণ সম্পদ আত্মসাৎ করে নিয়ে যাচ্ছে। কারণ একটাই সেটা হলো যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থনের প্রয়োজন নেই সরকারের। ফলে তারা ভোটেই বিশ্বাস করে না। যদি ভোটের প্রয়োজন হতো তারা অবাধ ও ‍সুষ্ঠু নির্বাচন করতো, ৭ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচন হতো না। এই অবস্থার পরিবর্তনে ‘ভোটের অধিকার’ পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে এজন্য সকলকে সেজন্য একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান নজরুল ইসলাম খান।


বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলের প্রসঙ্গ টেনে দলের প্রথম শ্রমবিষয়ক সম্পাদক বলেন, ’৭৮ সালে জিয়াউর রহমান উনি যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করলেন সেই নির্বাচনে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল। আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দল একসাথে মিলে ঐক্য করেছে এবং জেনারেল ওসমানি সাহেবকে প্রার্থী করেছে জিয়াউর রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে জাস্টিস আবদুস সাত্তারের সময়ে যে নির্বাচনে সেখানেও ড. কামাল হোসেনকে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী করেছে। শহীদ জিয়া ’৭৯ সালে যে সংসদ নির্বাচন করেছিলেন সেই সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল। বেগম খালেদা জিয়া ’৯১ সালে যে নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হন সেই নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করেছিল। অর্থাৎ কৌশলে অন্যদের বাইরে রেখে কিংবা জোর-জবরদস্তি করে অন্যদের নির্বাচনের বাইরে রেখে নেতা বা প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হওয়ার ইতিহাস বিএনপির নাই। ’৯৬ সালের নির্বাচন করতে হয়েছিল একটা বিশেষ কারণে এবং যে কারণে সেই নির্বাচন করতে হয়েছিলে সেই বিল পাস করেই বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ করেই এই অফিসের সামনে জনসভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। সুতরাং আজকে বাংলাদেশে প্রকৃত গণতন্ত্র নাই। আমরা গণতন্ত্রহীন অবস্থায় জীবনযাপন করছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে গণতন্ত্র আমরা অর্জন করেছিলাম আমাদের লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে সেই গণতন্ত্র আজ নেই, তিরোহিত হয়েছে।


নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল হয়। এতে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বক্তব্য রাখেন। এর আগে সকালে বনানী কবরস্থানে আরাফাত রহমান কোকোর কবরে ফাতেহা পাঠ করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ফিরোজসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।