ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশে বিশেষ পরিস্থিতি তৈরী করতে আওয়ামী লীগের গুপ্তবাহিনী ব্যবহার করে নিজেদের প্রার্থীদেরকে হত্যা বা গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, দেশ বিদেশের গণতন্ত্রকামী শক্তিকে ধোকা দিয়ে বোকা বানাতে বানর খেলার আসর জমানোর মতো আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপরজনকে লেলিয়ে দিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারির ‘ডামি নির্বাচনে’র আসর জমানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তবে ইতোমধ্যেই গণতন্ত্রকামী জনগণ সাজানো-পাতানো এই ভাগবাটোয়ারার নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর অপশক্তি একদিকে আবোলতাবোল বকতে শুরু করেছে। অপরদিকে ‘ডামি নির্বাচনে’ কে ‘আসল’ আর কে ‘ডামি’ এসব নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে সারাদেশে সন্ত্রাস-সংঘর্ষ-হানাহানি-খুনোখুনি শুরু হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বানর খেলার আসর জমানোর মতো ভুয়া নির্বাচনের আসর জমানোর খেলা খেলতে গিয়ে আওয়ামী অপশক্তি এখন নিজেরাই নিজেদের পাতা ফাঁদে আটকে পড়েছে। ভোট ডাকাতির এই নির্বাচনে এমপি হওয়ার সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে না চাওয়ায় বরিশালে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় ভোট ডাকাত হাসিনার সমাবেশেই আওয়ামী ভোট ডাকাতদের দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন খুন হয়েছে। অনেকে আহত হয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, এমন নৈরাজ্যকর অবস্থা থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে আওয়ামী মাফিয়া চক্র বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল বিএনপিকে তাদের মিথ্যাচার-অপপ্রচার আর প্রতিহিংসার টার্গেটে পরিণত করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিএনপির বিরুদ্ধে সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা বলেছে, বিএনপির নাকি দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই। আর ওবায়দুল কাদেরের আশংকা গুপ্তহত্যার। হাসিনা-ওবায়দুলের এ ধরণের বক্তব্য পাগলের প্রলাপ মনে হলেও গণতন্ত্রকামী জনগণের সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর মহাসমাবেশের আগে ওবায়দুল কাদের হুমকি দিয়ে বলেছিলো, ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের পরিণতি শাপলা চত্বরের চেয়েও ভয়াবহ হবে। ওবায়দুল কাদের তার সেই অগণতান্ত্রিক এবং বেআইনী হুমকি কার্যকর করেছিল। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত একটি মাফিয়া চক্রকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গ্রেনেড বোমা হামলা চালিয়েছিলো। আওয়ামী অপশক্তি এখানেই থেমে থাকেনি। বিএনপিকে ফাঁসানোর জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। নির্মমভাবে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করেছিল। এভাবে একটি উদ্দেশমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে উল্টো বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়ে হয়রানি-গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে।
সুতরাং, খুনি হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের ব্যাপারে আমি দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে সতর্ক থাকার আহবান জানাই। কারণ, বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের দলগুলোর আশংকা আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসরদের মধ্যে কে ‘আওয়ামী’ আর কে ‘ডামি’ কোন ‘মার্কা’ আসল আর কোনটা ‘নকল’ এইসব নিয়ে ভাগবাটোয়ারার ভুয়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হানাহানি খুনোখুনি শেষ পর্যন্ত মাফিয়া চক্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের জনগণ থেকে এবং বিদেশের গণতান্ত্রিক শক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ ইচ্ছেকৃতভাবে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ওবায়দুল কাদেরের আগাম কথায় আরো আশংকা বেড়েছে আওয়ামী লীগের গুপ্তবাহিনী নিজেরাই নিজেদের ‘নৌকা-লাঙ্গল-পাগল-ঈগল’ প্রার্থীদেরকে হত্যা বা গুপ্তহত্যার পথও বেঁচে নিতে পারে। সুতরাং, গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রতি আহবান, আপনারা সতর্ক থাকুন। সজাগ থাকুন। সম্ভব হলে আওয়ামী অপকর্মের সাক্ষ-প্রমান রেকর্ড করে রাখুন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজ আমি আরো একটি বিষয় আবারো জনগণের সামনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে চাই সেটি হলো, দেশে কাদের রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে কারা রাজনীতি করবে কিংবা করবেনা এটি কোনো ফ্যাসিস্ট, ভোট ডাকাত, সন্ত্রাসী, জালিম দুর্নীতিবাজ শাসকের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভর করেনা। এটা নির্ভর করবে জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশে কে রাজনীতি করবে আর কি রাজনীতি চলবে। ১৯৭৫ সালে নিজেরাই নিজেদেরকে নিষিদ্ধ করার পর স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের বদান্যতায়দেশে পুনরায় স্বনামে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছিলেন সেই ইতিহাস স্মরণ করুন। মনে রাখবেনর্যাব-পুলিশের বন্দুকের জোরে নয়, শত জুলুম নির্যাতনের পর বিএনপি টিকে আছে সারাদেশের কোটি কোটি জনগণের সমর্থনে। বিএনপি কারো করুনার উপর নির্ভর করে রাজনীতি করেনা। বিএনপি বাংলাদেশের দল। বিএনপি জনগণের ভালোবাসায় ধন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষকের দল।বিএনপি মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়ার দল। বিএনপি দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের দল। জনগণের জন্য বিএনপি বিএনপির জন্য জনগণ। এবং আজ আবারো বলি বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস্য বাংলাদেশের জনগণ। বিএনপির শেকড় দেশের ভেতরে। বিএনপির শেকড় গণতন্ত্রকামী জনগণের হৃদয়ে।