বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের স্বার্থ রক্ষায় পিছিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই ।
বিএনপির টানা তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিন শেষে সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে তারেক রহমান এই মন্তব্য করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সারাদেশে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত রাজপথ-রেলপথ-নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধ শুরু হয়েছে। তিনদিনব্যাপী অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার বিএনপি এবং বিরোধীদলগুলোর ডাকে চলমান এই অবরোধের সময় কিশোরগঞ্জ, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং পুলিশ সম্পূর্ণ উস্কানিমূলকভাবে গণতন্ত্রকামী জনগণের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রথমেই আমি হতাহতদের শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও সমবেদনা জানাই। যারা আওয়ামী লীগ দলীয় সন্ত্রাসী এবং কতিপয় আওয়ামী পুলিশের সন্ত্রাস সহিংসতাকে মোকাবেলা করে অবরোধ কর্মসূচি সফল করে চলছেন আমি তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।
তারেক রহমান বলেন, আমি একটি বিষয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে চাই, দেশে গণতন্ত্র-মানবাধিকার-ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই চলমান আন্দোলনে যারা হতাহত হয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কিংবা হচ্ছেন, আসন্ন দিনে জনগণের প্রতক্ষ্য ভোটে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার এবং দলের পক্ষ থেকেও অবশ্যই সেইসব পরিবারগুলোর অবদান সম্মানের সঙ্গে মূল্যায়ন করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগ এবং কতিপয় আওয়ামী পুলিশ জোর করে লঞ্চ এবং পরিবহন মালিকদেরকে অবরোধের সময় যানবাহন চলাচলে বাধ্য করছেন। আওয়ামী লীগের অগণতান্ত্রিক সন্ত্রাসী এবং গণবিরোধী চরিত্র সম্পর্কে দেশবাসী অবগত। তবে পুলিশের ইউনিফর্ম পরা পুলিশের কতিপয় দলবাজ, দুর্নীতিবাজ, সুবিধাভোগী কর্মকর্তা যারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে চূড়ান্ত রকমের বাড়াবাড়ি করছেন, তাদেরকে আবারো আহবান জানিয়ে বলতে চাই, ২৮ অক্টোবরের সময় বিরোধীদলের সমাবেশকে বানচাল করতে আপনাদের অপকর্মের সকল প্রমান ফাঁস হতে শুরু করেছে। এখনো সময় আছে, সতর্ক হোন। নিজেদের হিনো দলীয় স্বার্থে মাফিয়া সরকার আপনাদেরকে ব্যবহার করলেও ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক সরকারের সময় প্রতিটি অপকর্মের জন্য আপনাদেরকে অবশ্যই আইনের মুখোমুখি হতে হবে।
পরিবহন মালিকদের প্রতি আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, অবরোধের সময়ে লঞ্চ কিংবা গাড়িসহ ইমার্জেন্সি ছাড়া সকল রকমের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখুন। এ কর্মসূচি আপনাদের বিরুদ্ধে নয়, এই অবরোধ কর্মসূচি আগামী দিনে আপনার স্বাধীনতা এবং আপনার ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এর আগে বিএনপি যখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সমাবেশ ডেকেছিল তখন আপনারা সমাবেশের এক/দুইদিন আগেই যানবাহন, লন্ঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আমরা বিশ্বাস করি, আপনারা সেই সময় গণতান্ত্রিক সমাবেশের বিরুদ্ধে ছিলেন না কিন্তু নিশিরাতের ভোট ডাকাত সরকার বিরোধীদলের সমাবেশ ব্যর্থ করতে আপনাদেরকে যানবাহন বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছিল। সুতরাং, ভবিষ্যতে কেউ যেন এভাবে আপনার কিংবা আপনাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার সুযোগ না পায়, তেমন একটি রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ার লক্ষ্যেই বিএনপিসহ সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান এই অবরোধ কর্মসূচি। সুতরাং, এ অবরোধ সফল করা আপনারও দায়িত্ব বলেই আমি মনে করি।
তারেক রহমান তার বক্তব্যে প্রিয় দেশবাসী সম্বোধন করে বলেন, চলমান আন্দোলনকে বানচাল করতে মাফিয়া সরকার মিথ্যাচার অপপ্রচারের শুরু করেছে। অতীতের মতো তারা নিজেরাই সহিংসতা এবং নাশকতা করে গণতন্ত্রকামী জনগণকে ফাঁসানোর অপকৌশলে লিপ্ত হয়েছে। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ বানচাল করতেও আওয়ামী লীগ এবং চিহ্নিত কতিপয় আওয়ামী পুলিশ কর্মকর্তা অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নেও লিপ্ত দিয়েছিলো। গ্রেফতার হয়রানি কিংবা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে মিথ্যাচার চালিয়ে এবার আর আওয়ামী লীগকে বাঁচানো যাবেনা। দেশের জনগণ এমনকি বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তির সামনেও বর্তমান ব্যাংক ডাকাত সরকারের অগণতান্ত্রিক অমানবিক চেহারা উন্মোচিত হয়ে পড়েছে।
তারেক রহমান বলেন, আজ আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে আসি...তাহলে আইনের দোহাই দিয়ে বেআইনি কাজে লিপ্ত পুলিশের চিহ্নিত অপশক্তি লেজগুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবে।জনগণের ভোট ডাকাতি করে মাফিয়া সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। জনম্যান্ডেটহীন এ সরকার- সংসদ অবৈধ। সুতরাং, ঘর থেকে গ্রেফতার বরণ কিংবা মিথ্যা গায়েবি মামলায় আদালতের বারান্দায় সময়ক্ষেপণের পরিবর্তে বর্তমান অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে জনরায়ে একটি বৈধ সরকার গঠনের জন্যই চলমান এ আন্দোলন। দেশব্যাপী তিনদিনের অবরোধের পরও মাফিয়া সরকার জনগণের দাবি মেনে না নিলে সামনে আরো কঠোরতর আন্দোলন। এবার বিজয় নিশ্চিত করে তবেই দেশের মানুষ ঘরে ফিরবে ইনশাআল্লাহ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি সারাদেশে আমার দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং সকল বিরোধী দলের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলতে চাই- দেশ এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষায় কখনো পিছিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই সুতরাং, একজন গ্রেফতার হলে সিদ্ধান্তহীনতার কোন সুযোগ নেই। পিছু হটার কোন সুযোগ নেই। আন্দোলনের পতাকা হাতে আপনিই এগিয়ে যান। আন্দোলনের নেতৃত্ব নিন, আন্দোলনের নেতৃত্ব দিন।