image

এক দফা দাবি আদায়ে দেশব্যাপী তিন দিনের অবরোধ সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

 

সোমবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি দেশবাসীর প্রতি এই আহ্বান জানান।

 

তারেক রহমান বলেন, মাফিয়া সরকারের দুর্নীতি দুঃশাসনে দেশ এবং জনগণের স্বার্থ আজ বিপন্ন। যারা রাজনীতি করছেন কিংবা করছেন না- দেশের প্রতিটি মানুষ আজ কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সাধারণ জনগণের স্বার্থের দিকে ভোট ডাকাত হাসিনার খেয়াল নেই। শেখ হাসিনা আবারো জনগণের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতা রক্ষায় ব্যস্ত।

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে ভোট ডাকাত হাসিনা একদিকে অন্য দেশের করুনা ভিক্ষা করছে অপরদিকে তার ভোট ডাকাতির সহযোগী করতে জনপ্রশাসন এবং পুলিশের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে খুশি রাখার জন্য অবৈধভাবে খরচ করছে শত শত কোটি টাকা। অথচ দেশের অধিকাংশ মানুষ অর্ধাহারে -অনাহারে কিংবা চরম আর্থিক টানাপোড়েনে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। দুর্নীতির কারণে বাজারের উপর মাফিয়া সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে। দ্রব্যমূল্যের বেপরোয়া ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। ডাল চাল আটা তেল চিনি লবনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য এখন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।

 

তারেক রহমান বলেন, মাফিয়া সরকার ক্ষমতায় থাকলে অদূর ভবিষ্যতে জনগণকে অর্ধাহারে অনাহারে মরতে হবে। অনেককে পলাতক জীবন মেনে নিতে হবে অথবা মিথ্যা গায়েবি মামলায় আদালতের বারান্দায় জীবনের বাকি সময় পার করতে হবে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায়না। 

 

তিনি বলেন, জনগণকে মাফিয়া সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্ত করে নাগরিকদের ভোটের অধিকার, প্রতিটি নাগরিকের তিনবেলা খাবারের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিএনপি সারাদেশে তিনদিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষনা করেছে। ৩১শে অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে ২রা নভেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে রাজপথ, রেলপথ, নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। বিজয় অর্জিত না হওয়ায় পর্যন্ত জনগণ ঘরে ফিরে যাবে না।

 

তারেক রহমান বলেন, এই মুহূর্তে শুধু প্রয়োজন প্রতিটি কর্মসূচিতে গণতন্ত্রকামী জনগনের স্বতঃস্পুর্ত অংশগ্রহণ। 

 

ভোট ডাকাত শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে ইতোমধ্যেই ২৯ অক্টোবর গণতন্ত্রকামী জনগণ সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে আওয়ামী লীগ এবং কতিপয় পুলিশের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করায় আমি সারাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। হরতালে যারা হতাহত হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও সমবেদনা জানাই।

 

দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকামী প্রিয় জনগণ,

আমি জানি হরতাল অবরোধে আপনাদেরকে কিছুটা সাময়িক অসুবিধায় পড়তে হবে। তবে দেশ এবং জনগণের সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য আপনাদেরকে এই কষ্টটুকু মেনে নেয়ার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ জানাই। আপনার এই কষ্ট চলমান আন্দোলনকে পৌঁছে দিতে পারে চূড়ান্ত বিজয়ের বন্দরে। 

 

তিনি বলেন, ভবিষ্যতের একটি নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য আসুন আমরা এই কষ্টটুকু মেনে নেই। সুতরাং, যেকনো মূল্যে সারাদেশে সর্বাত্মক অবরোধ সফল করুন। ঘোষিত এইসব কর্মসূচির সফলতার উপর নির্ভর করছে, আপনার স্বাধীনতা। জনগণের মুক্তি। গণতন্ত্রের মুক্তি।  

 

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস্য জনগণ। অর্থাৎ আপনি-আপনারাই বিএনপির রাজনৈতিক শক্তি। র্যাব-পুলিশের বন্দুকের জোরে নয় জনগণের সমর্থন এবং শক্তির উপর নির্ভর করেই জনগণের অধিকার আদায়ে বিএনপি এগিয়ে চলেছে।

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বের সকল দেশেই মাফিয়াদের একমাত্র ভয় জনগণ। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকলে কখনোই কোনো রাষ্ট্র সমাজে মাফিয়া চক্র টিকে থাকতে পারেনা। ভোট ডাকাত হাসিনাও পারবেনা। বর্তমানে সুবিধাবাদী- দুর্নীতিবাজ একটি মাফিয়া চক্র ছাড়া দেশ-বিদেশের আর কোন গণতান্ত্রিক শক্তিই মাফিয়া সরকারের পাশে নেই। সুতরাং, শুধু প্রতিবাদ নয় এবার তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে ভোট ডাকাত হাসিনার মাফিয়া সরকারের পতন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। 

 

তারেক রহমান বলেন, গ্রেফতার হয়রানি করে জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন আর থামানো যাবেনা। গণতন্ত্রকামী কারাবন্দি মানুষেরা এবার প্রয়োজনে কারাগার থেকেও গণতন্ত্র মুক্তির আওয়াজ তুলতে বাধ্য হবে।

 

 

দলীয় নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, সারাদেশে আমার দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান, একজন গ্রেফতার হলে দ্বিধা দ্বন্দ্ব কিংবা পিছু হটার সুযোগ নেই। আপনিই আন্দোলনের পতাকা নিয়ে এগিয়ে যান। নেতৃত্ব নিন-নেতৃত্ব দিন।