image

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, আজ এতো অনিয়ম, দমন নিপীড়নের মধ্যে চিকিৎসক সমাজ, প্রকৌশলী সমাজ, কৃষিবিদ, ছাত্র, জনতা, বাড়িতে, গ্রামের কুঠিরে কুঠিরে, পদ্মা মেঘনার ঢেউয়ে, গাছের পাতায় পাতায় মর্মরে আজ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ধ্বনিত হচ্ছে। এই মুক্তির ধ্বনি আপনি শেখ হাসিনা আটকাতে পারবেন না। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে চিকিৎকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো: আবদুস সালাম এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো: মেহেদী হাসানের যৌথ পরিচালনায় আরো অংশগ্রহণ করেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো: রফিকুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. এ কে এম আজিজুল হক, ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, ডা. এম এ সেলিম, ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. শহীদুল আলম, ডা. এবাদুল করিম খান, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. এ এইচ এস পারভেজ, ডা. আবদুল কুদ্দুস, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ডা. খালেকুজ্জামান দীপু, ডা. জসীম উদ্দিন, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমানউল্লাহ, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা. আবুল কেনান, ডা. আদনান হাসান মাসুদ, ডা. শহীদুল হাসান বাবুল, ডা. সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ডা. মনোয়ারুল কাদির বিটু, ডা. খলিলুল্লাহ, ডা. জিয়াউল কবির জিয়া, ডা. মো: আরিফ হায়দার, ডা. আসাদুল্লাহ আহমেদ, ডা. এ কে এম মাসুদ আক্তার জীতু, ডা. নিলোফা ইয়াসমিন, ডা. মাসুম হাসান, মো: আকরাম আলী, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডাক্তার বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা এখন অত্যন্ত কঠিন। করোনা সময় তো অনেক মানুষ মারা গেছে, কই তার তো কোনো চিকিৎসা করেননি। ডেঙ্গু এই একই অবস্থা, এই রোগ উপসন করার জন্য যে ওষুধ দরকার সেটাও আপনি পারেননি। আর লিভার সিরোসিস এর মতো জটিল বিষয়গুলো, ডাক্তারা বলেছেন, অথচ আপনি কানে নিচ্ছেন না।

বেগম খালেদা জিয়া ১৭ সালের সুস্বাস্থ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সুস্থ মানুষ ছিলেন। তিনি লন্ডনে গেলেন, ওখান থেকে তিনি সুস্থ মানুষ ফিরলেন। আর জেলে নেয়ার পর সেই মানুষটা কেন হুইল চেয়ারে করে বের হলেন, এইটা প্রশ্ন, এইটা তো চিকিৎসকদেরও প্রশ্ন। তিনি বন্দি তাকে সম্পূর্ণ মুক্তি দেয়া হয়নি। তাকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এখন তাকে ১৫ দিন, ২০ দিন পর পর হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে, খুব গুরুত্বরো পরিস্থিতি।

শেখ হাসিনার লন্ডনের ওই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়, তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরানোর ছক কষছে। যা একটা প্রতারকদের মুখ এ রকম সত্য কথা বের হয়।

বাংলাদেশের এক নম্বর সেডিস (যে অন্যের ক্ষতি করে আনন্দ পায়) হলেন শেখ হাসিনা আর তার দুই নম্বর সেডিস আইনমন্ত্রী।

এই সরকারকে আর বিশ্বাস করা যায় না, জাতির প্রত্যেকটিই ভেন্টিলেশনের (শ্বাস প্রশ্বাস) ঢাকনা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এই থেকে মুক্তি পেতে এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদায় করতে হবে।

এই সরকারের অধীনে কিভাবে নির্বাচন হবে প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ১৮ সালের মতো নির্বাচনের আগেই গ্রেফতার করছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে মিথ্যা, মামলা দিয়ে যাচ্ছে। এদের অধীনে নির্বাচন হলে ভোটের আগেই বিএনপির ৩০০ আসনের প্রার্থীদের মামলা দিয়ে গ্রেফতার করবে। আর মাঠ শূন্য করে একতরফা নির্বাচন করবে।

তিনি বলেন, আজ এতো অনিয়ম, দমন নিপীড়নের মধ্যে চিকিৎসক সমাজ, প্রকৌশলী সমাজ, কৃষিবিদ, ছাত্র, জনতা, বাড়িতে, গ্রামের কুঠিরে কুঠিরে, পদ্মা মেঘনার ঢেউয়ে, গাছের পাতায় পাতায় মর্মরে আজ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ধ্বনিত হচ্ছে। এই মুক্তির ধ্বনি আপনি শেখ হাসিনা আটকাতে পারবেন না।

ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুন আল রশীদ বলেন, বাংলাদেশের তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী তাকে আটক করে রেখেছে সরকার। তার চিকিৎসা করতে দিচ্ছে না। অত্যন্ত সত্য, বেগম খালেদা জিয়া অনেক অসুস্থ, তার মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার আর এ দেশে চিকিৎসা নেই। সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এখন তার সুচিকিৎসা করতে হলে বিদেশে নিতে হবে।

বেগম খালেদা জিয়ার সু-চিকিৎসার ব্যাবস্থা না করে যদি তার কোন কিছু হয়, এই সরজন্ত্র সাথে যারা জড়িত তারা কেউ রেহাই পাবে না। তাদের বিচার হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

ড্যাবের মহাসচিব আব্দুস সালাম বলেন, আমরা সারাদেশের মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করেছি। আমমরা এই সরকারের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইব না। তাকে মুক্ত করেই দেশের বাইরে চিকিৎসা করে সুস্থ করে আনব।

বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে তার চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন। তারা বলেছেন, অতিসম্ভব তাকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে, এ দেশে তার কোনো চিকিৎসা নেই।

সরকারের অনেক পর্যায়ে থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এর প্রতিটি জবাব এ দেশের জনগণ দেবে, ইনশাআল্লাহ।

অন্য বক্তারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাকে পরিকল্পিতভাবে বর্তমান সরকার তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা প্রয়োজন।

অন্য বক্তারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাকে পরিকল্পিতভাবে বর্তমান সরকার তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা প্রয়োজন। এটা বাংলাদেশে কোনোমতে সম্ভব নয়। তাকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হোক। যদি বেগম খালেদা জিয়ার কোনো দূর্ঘটনা ঘটে তার জন্য দায়ী থাকবে সরকার।