image

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে তাদের আন্দোলন সঠিক পথে চলছে; আর বাংলাদেশে এবার ভোটার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। তিনি বলেন, “পশ্চিমা দেশগুলোর অঙ্গীকার, চলমান আন্দোলন পরিচালনায় আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের উৎসাহিত করেছে।” 

তিনি বলেন, ‘তাদের যে কমিটমেন্ট আছে গণতন্ত্রের প্রতি সেই কমিটমেন্ট কিন্তু আমরা সামাল দিতে পারছি, সেই কমিটমেন্ট আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। একইসঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে আমরা যারা লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি এটাকে সামনে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

রবিবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে অনুষ্ঠিত একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান ও সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশীয়-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা’ শীর্ষক এই সেমিনার হয়। অনুষ্ঠানে ‘নো কমেন্ট’ সম্পাদিত গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন বিএনপি মহাসচিব। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন সাংবাদিক বাবুল তালুকদার। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন লেখকের লেখা নিয়ে বইটি প্রকাশ করেছে কলি প্রকাশনী। মূল্য রাখা হয়েছে ৯৯৯ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী চাইলেও এবার ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘যারা এভাবে কথা বলে, যেভাবেই হোক নির্বাচন হবে। নির্বাচন তো আমরাও চাই এবং সেটা জনগণের অধিকারের জন্য। কিন্তু সেই নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে যেখানে জনগণ তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।’

শেখ হাসিনা চাইলেই যে, বিনা ভোটারের মাধ্যমেই তিনি নির্বাচিত হবেন… সেটা এবার হবে না। ২০১৪ সালে যা করতে পেরেছেন, ২০১৮-তে যেটা করতে পেরেছেন এবার সেটা আপনি করতে পারবেন না। কারণ এবার মানুষ যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তাতে করে সেটা সম্ভব হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেখানো পথ, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবের দেখানো পথ, যেটা তিনি বারবার বলছেন যে, ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথেই ফয়সালা করার জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি, চূড়ান্ত বিজয় অবশ্যই আমরা অর্জন করতে সক্ষম হবো, যেখানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় মুক্তি সম্ভব হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসল কথা হচ্ছে, উনি (শেখ হাসিনা) কালকে বলে দিয়েছেন তোমরা যে যা বলো ভাই আমার সোনার হরিণ চাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাই বলুক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যাই বলুক, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো যাই বলি, উনার ওই সোনার হরিণ চাই। অর্থাৎ ক্ষমতায় কাউকে যেতে দেবো না। টোটাল সংকটটা ওই জায়গায়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কিছু কিছু লোক আছেন যারা সবসময় হতাশায় ভোগেন। আমার একটা বিশ্বাস যে, মাঠে থাকলে এই হতাশা আসে না। আমি তো আমার দলের কোনও মানুষের মধ্যে, কর্মীদের মধ্যে, নেতাদের মধ্যে হতাশা দেখি না। আমাদের সঙ্গে যারা আছেন যুগত আন্দোলন করছেন তাদের মধ্যে কোনও হতাশা দেখি না। আমরা বিশ্বাস করি এই সংগ্রামে অবশ্যই আমরা জয়লাভ করবো। কারণ আমরা সত্যের পথে আছি, সঠিক পথে আছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।