image

ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোনও সভ্য লোকের দল না।মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্মরণ সভার আয়োজন করে শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদ।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘টুপ করে পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেবেন– এটা কী আমরা ভুলে গেছি? আবার বলছেন, মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেবেন। এটা আপনারা (আওয়ামী লীগ) কী শুরু করেছেন! রাজনীতি করেন যেহেতু তাই রাজনৈতিক কাজকর্ম করেন। রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলেন। শিষ্টাচার শেখেন। বিএনপি একটা ভদ্রলোকের দল। আর আওয়ামী লীগ করে অসভ্য লোকেরা। এটা কোনও সভ্য লোকের দল না।’

‘অজ্ঞান ব্যক্তির অজ্ঞান কথা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ইউরেনিয়াম কত প্রকার ও কী কী সেটা কি আপনি (ওবায়দুল কাদের) জানেন? এ বিষয়ে আপনার কোনও জ্ঞান আছে? একজন উন্মাদ ব্যক্তির প্রলাপ! ইউরেনিয়াম যদি কারও মাথায় দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে এর যে তেজস্ক্রিয়তা তাতে মানুষ মারা যেতে পারে। তাহলে কী আপনি হুমকির আসামি হলেন না? মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাসকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন আপনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের আপনি হত্যার হুমকি দিয়েছেন।’

ক্ষমতা থাকার জন্য যে ধরনের নির্বাচনকালীন সরকার দরকার আওয়ামী লীগ সেই ব্যবস্থা করেছে মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজ আমরা একটা নতুন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। তাদের নতুন বলা যাবে না, এটা ১৫ বছরের পুরান। তারা ১৫ বছর ধরে অত্যাচার করছে। তাদের স্বৈরাচারও বলা যাবে না, তারা হলো কর্তৃত্ববাদী। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে তাদের সমস্যাটা কী? আমরা কী ’৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেই নাই? তাহলে তারা কেন যেতে চাচ্ছেন না। কারণ তারা জানেন, বাংলাদেশের জনগণ তাদের আর পছন্দ করে না। তাই ক্ষমতায় থাকার জন্য যে ধরনের সরকার দরকার তারা সেই সরকার ব্যবস্থা রাখতে চায়।’

আওয়ামী লীগ বিএনপির নেতাদের বিচারের দায়িত্ব নিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যখন আমি কোর্টে যাই, তখন দেখি কোর্টের আশেপাশে অনেক ভিড়। এই ভিড় আমি বাজারেও দেখি নাই। এমনকি ঈদের বাজারেও না। কোর্টের কোথাও লোক বসার জায়গা নেই, সব জায়গায় বিএনপির লোক। আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগ দায়িত্ব নিয়েছে, সব বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়ার। তার গায়েবি মামলা দেবে এবং কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেবে। এই হলো তাদের দায়িত্ব!’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৪০ লাখ নেতার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এত লোককে জেলে দেওয়ার জায়গা নাই। কিন্তু আমি জানি, জেলখানায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ লোকের জায়গা দেওয়া সম্ভব। আমার যে ভাইদের সরকার জেলে নেবে, যারা বাইরে থাকবেন আপনারা আন্দোলন করে সরকারকে তছনছ করে দেবেন। ৯০ এ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমি যুবদলের প্রেসিডেন্ট ছিলাম। যখন আমি গ্রেফতার হই, তখন সারা দেশের যুবদলের নেতাকর্মীরা জ্বলে উঠেছিল। সারা দেশ তছনছ করে দিয়েছিল।’

স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব। এ সময় আরও ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনীসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা।