প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলকে জানিয়েছে বিএনপি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে সোমবার বিএনপি নেতাদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে খসরু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা সবাই অবগত আছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন শুধু দেশের মধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ নয়, আজকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। যেহেতু বাংলাদেশের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ, বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে চায় তারা একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যেভাবে বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায়, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোও কিন্তু তারা বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক, আন্তর্জাতিক মানের একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়।
‘সে প্রেক্ষাপটে আপনারা দেখেছেন এর আগে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন…একটা ডেলিগেশন আসছিল। তারা বাংলাদেশের সব শ্রেণির লোকজন, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে সকলের সাথে কথা বলে গেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং যাওয়ার পরে তারা সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, বাংলাদেশে তারা কোনো পর্ববেক্ষক পাঠাবে না। কারণ বাংলাদেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, ‘এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডেলিগেশন আসছে একই উদ্দেশ্য নিয়ে। তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী যে পরিবেশ, পর্বেবেক্ষণ করতে আসছে; আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না। সকলের মনে আজকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে প্রশ্ন জেগেছে, তারা সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে এসেছে জানার জন্য এবং তারা ইতোমধ্যে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছে। আরও কথা বলবে আমাদের সাথে কথা বলার পরে আরও অন্যান্যদের সাথে কথা বলবে।
‘কথা একটিই ঘুরেফিরে যে, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, আন্তর্জাতিক মানের, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশে হবে কি না এবং হতে হলে কীসের প্র্রয়োজন? আমরা সেটা কীভাবে করা যায়। আমরা তো স্বাভাবিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা যেটা বলে আসছি এতদিন যে, (প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা বিগত দুই-তিনটা নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে যাদের বয়স ৩০-৩২ বছর হয়েছে, তারা বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি; তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি; বরঞ্চ আরও অবনতি হয়েছে; বরঞ্চ এখন নিপীড়ন, নির্যাতনসহ ভোট চুরির প্রকল্প আরও অধিকতর শক্তিশালী হয়েছে এবং তারা এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে ভোট চুরির প্রকল্পকে।’
তিনি বলেন, ‘একেবারে বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে সরকারি কর্মকর্তা, অলিগার্ক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদসহ তারা একটা প্রজেক্ট করেছে, যে প্রজেক্টের মাধ্যমে আবারও বাংলাদেশের মানুষের তারা ভোট চুরি করার অভিপ্রায়ে কাজ করে যাচ্ছে। এখান থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের যে এক দফা দাবি, এক দফার দাবি হচ্ছে শেখ হাসিনার সরকারের, সরকার বলাটা ভুল হবে, এই রেজিমের পদত্যাগ করতে হবে।
‘একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন হতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে। এই নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সকলের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে আরেকটি নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।’