আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দিল্লি কি আপনাদের বলেছে, এভাবে অপকর্ম করতে, নির্বাচনের দরকার নাই, জোর করে নির্বাচন করতে? সেটা পরিষ্কার করে বলুন।
বুধবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশন মিলনায়তনে পেশাজীবী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ২২টি পেশাজীবী সংগঠন এই কনভেনশনে অংশ নেয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ এতো বেশি পা-চাটা হয়ে গেছে যে তাদের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন ভয় নাই, ওরে ভয় নাই, তলে তলে আপস হয়ে গেছে। তাহলে স্বীকার করলেন এতো দিন আপস ছিল না? আসলে আপনাদের মতো এতো বড় মিথ্যাবাদী পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এর আগে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন আলোচনা হয়েছে- আসলে কোনো আলোচনা হয়নি। বলেছে বৈঠক হয়েছে- আসলে কোনো বৈঠকও হয়নি। ছবি তোলার জন্য কত লবিং করেছে সেটা আমরা সবাই জানি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘রং হেডেড পারসন’’ অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছে। তাদের কোনো বৈধতা নেই। তাদের যেমন দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না, গণতান্ত্রিক বিশ্বের মানুষও বলে দিয়েছে তোমাদের আমরা আর বিশ্বাস করি না। যেসব দেশ সারাবিশ্বে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপে দেখতে চায়, তারা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়নি, ২০১৮ সালেও কোনো নির্বাচন হয়নি।
এবারও তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। তাদের অধীনের কোনো নির্বাচনকে কখনো বৈধতা দেয়া হবে না।
লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার কথা এত কুরুচিপূর্ণ যা নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। তবে তিনি তার বক্তব্যে কয়েকটি সত্য কথা বলে দিয়েছেন। তাহলো এদেশে যা কিছু ঘটে তা শেখ হাসিনার ইঙ্গিতে ঘটে। খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার স্বীকারোক্তিতে তা প্রমাণিত হয়ে গেছে। এতে স্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়েছে এদেশে বিচার বিভাগের কোনো প্রয়োজন নাই। শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই হলো সিদ্ধান্ত। এখন শেখ হাসিনা নিজেকে নিজে সম্রাট ঘোষণা দিলেই পারেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২ বছর ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। চলমান আন্দোলনে আমাদের ২২ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। এখনও আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে কোনো আপস নেই। কোনো শর্ত নাই, ১/১১ এর সময় অন্যরা দেশের বাহিরে গেছে কিন্তু আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া দেশের মাটি ছেড়ে যাননি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ৪০১ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে সরকার চাইলে আইনের মধ্যে যেকোন নাগরিকের সাজা মওকুফ করে দিতে পারে, কিন্তু তারা এখন মিথ্যাচার করছে। তাহলে আওয়ামী লীগ সরাসরি বললেই তো পারে তারা খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায়।
নির্বাচন নির্বাচন করে এবার কোনো লাভ নেই। আগে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। এরপর নির্বাচনের কথা আসবে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর অব. সৈয়দ ইবরাহিম, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।