image

আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিনা চিকিৎসায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার হত্যা করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এরা (সরকার) আসলে কাপুরুষ। এরা ভীতু। এরা জানে যে, বেগম খালেদা জিয়া যদি সুস্থ হয়ে যান, যদি আবার জনগণের মধ্যে ফিরে আসেন তাহলে দেশনেত্রীর ডাকে কোটি মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসবে। তাদের তখতে তাউস ধ্বংস হয়ে যাবে।  


সোমবার বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুপুর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। বিএনপি মহাসচিব যখন মঞ্চে আসেন তখন বিজয়নগর মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় সমাবেশের বিস্তৃতি ঘটে।


মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ জিয়া দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার পর দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে দুটি শিশু সন্তানসহ পাক বাহিনী আটক রাখে। আমি বলবো তিনি ছিলেন দেশের প্রথম মহিলা মুক্তিযোদ্ধা। অবশ্য এ কথা বললে আওয়ামী লীগের গা জ্বলবে।

তারাতো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, পাকিস্তানের ভাতা খেয়েছেন।


তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেত্রী। তিনি ক্ষমতায় এসেই কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত খাজনা মওকুফ করেছেন। ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ মওকুফ করেছেন। আর এখন ঋণের কারণে কৃষকের কোমরে দড়ি ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরা লুটেরা সরকার। এরা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাড়ী করছেন। অথচ, আজকে কৃষক ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। সারের দাম তিনগুণ বেড়েছে। 


বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব জায়গায় সিন্ডিকেট। আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেট করে টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এমন একটি ব্যবস্থা কায়েম করছে যে, সব টাকা আজ ওদের পকেটে। আজ কৃষক ভাইদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকার কৃষকদের যে ধান কিনে সেখানেও কমিশন। বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার ওপরও ওরা বসায়। সত্যিকারের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছে না। আওয়ামী ব্যবসায়ীরা আজ ব্যবসা করছে। সাধারণ মানুষ চাকরি পায় না। বিশ লক্ষ টাকা দিয়ে ঘুষ দিয়ে চাকরি পেতে হয়। 


তিনি বলেন, আজকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন আইন দেখানো হচ্ছে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) কানের চিকিৎসার জন্য বন্দী থাকা অবস্থায় বিদেশ যান নাই? আসলে তারা খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। এরা জোর করে তাকে (খালেদা জিয়া) বন্দী করে রেখেছে। আজকে মনে হচ্ছে শাসকরা রাজা আর আমরা প্রজা। এরজন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। আমরা রাজতন্ত্রের জন্য নয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধ করেছি।


মির্জা আলমগীর বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে এখন তারা খুব লেগেছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে সমস্ত কূটনৈতিক রীতিনীতিকে উপেক্ষা করে তার বিরুদ্ধে যা তা কথা-বার্তা বলছে। যে দেশটাতে আমাদের সবচেয়ে বেশি গার্মেন্ট যায়, সেই দেশটার সঙ্গে আজকে তারা (সরকার) সমস্যা তৈরি করেছে। 


কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, বরকতউল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।