image

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো মানবিক মূল্যবোধ নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, তাদেরকে বিদায় নিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘এ সরকার দেশের মানুষের গণতন্ত্রের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তারা এক দলীয় বাকশাল কায়েম করেছে। এই সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পায়।’

রোববার (১ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ময়মনিসংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের হারুয়া বাজার সংলগ্ন তেরচাটি বালুর মাঠে ময়মনিসংহ উত্তর জেলা বিএনপির সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর এক দফা দাবিতে ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ অভিমুখে বিএনপির এ রোডমার্চ সকাল ১০টায় ত্রিশালের বগার বাজার এলাকা থেকে শুরু হয়।


মঈন খান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা প্রয়োজন তা বাংলাদেশে নেই। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে হবে। কিন্তু এই স্বৈরাচার সরকারের কোনো মানবিক মূল্যবোধ নেই। দেশের একজন তিন বারের প্রধানমন্ত্রীকে তার মৌলিক ও সাংবিধানিক সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে। বেগম খালেদা জিয়া শুধু দলের প্রধান নন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি আমাদের গণতন্ত্রের মা। গণতন্ত্রের জন্য আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এখনো সংগ্রাম করছেন। আজ তিনি গুরুতর অসুস্থ।’

এ সময় তিনি খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর জোর দাবি জানান।বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘এই সরকার নিজেকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে। কিন্তু স্বাধীনতার মূল বক্তব্য হলো গণতন্ত্র। আর সেই গণতন্ত্রকেই তারা হত্যা করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। তাই এক দফার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় জানাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘তারা মনে করে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে আওয়ামী লীগ যা বলে দিবে তাই মানবে, যা কোনোদিন হতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ ভোটের অধিকার চায়, গণতন্ত্রের অধিকার চায়।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ওপর আওয়ামী লীগের রাগ এ জন্য যে খালেদা জিয়া দেশের মানুষকে গণতন্ত্র দিয়েছে, দেশের মানুষকে ভালোবাসার ফলে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। যতক্ষণ খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারবো ততক্ষণ আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। যতক্ষণ এ সরকার পদত্যাগ না করবে ততক্ষণ আমরা রাজপথ থেকে ফিরে যাবো না।’

এর আগে বিকেল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হলেও দুপুর ১২টার পর থেকেই নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার ছবি সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন।

ময়মনসিংহ জেলা (উত্তর) বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম এনায়েত উল্লাহ কালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ওয়ারেস আলী মামুন, শরিফুল আলম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল এবং জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌর শাখার নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে রোডমার্চের গাড়ি বহর সেখান থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়।