image

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেলফি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের উচ্ছ্বাসের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সেলফি সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না। নয়াদিলিস্নতে জি-২০ সম্মেলনে জো বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার তোলা সেলফি প্রসঙ্গ টেনে রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'এত ব্যানক্রাফট, দেউলিয়া, নিঃস্ব হয়ে গেছেন আপনারা যে, বাইডেনের সঙ্গে একটা সেলফি তুলে এখন ঢাকঢোল পিটাচ্ছেন আহা আমরা জিতে গেছি...। আসলে জিতাবে তো বাংলাদেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে। সেই ভোটটা ঠিকমতো হওয়ার ব্যবস্থা করেন। তা না হলে কোনো বাইডেনেই আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না, সেলফিও রক্ষা করতে পারবে না।' মির্জা ফখরুল বলেন, 'ওবায়দুল কাদের সাহেব নাকি বলেছেন, ফখরুল সাহেব এখন কী বলবেন। আমি বলি, আমার পরামর্শটা নেবেন। এই ছবিটা (জো বাইডেনের তোলা সেলফি) বাঁধিয়ে গলায় দিয়ে ঘুরে বেড়ান। ওটা আপনাদের যথেষ্ট সাহায্য করবে। এটা দিয়ে জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে বাইডেন এখন আমার সঙ্গে আছে।' বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'অথচ আপনার এই প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন দিন আগে কী বললেন? তিনি বললেন, আমেরিকা এখন বলছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নাকি তাদের দিয়ে দেওয়ার জন্য। যেহেতু সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দিচ্ছে না, সে জন্য আমেরিকা নাকি তাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। তাহলে এখন কি আমরা বুঝব, আপনি সেন্ট মার্টিন দ্বীপটা দিয়ে দিয়েছেন?' মির্জা ফখরুল বলেন, 'কদিন আগে আবার উনি (প্রধানমন্ত্রী) আরেকটা কথা বলেছেন, এই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে আমেরিকা বেস করতে চায় এবং এই এলাকাতে সে-ই প্রভুত্ব করবে, দেশগুলো দখল করবে, আক্রমণ করবে।' সেলফির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'তাতে করে র?্যাবের ওপর থেকে স্যাংশন ওঠে যায়নি। ভিসা নীতির পরিবর্তন হয়নি। নতুন ডেমোক্রেসি কনভেনশন ডেকে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সুতরাং ভেবেচিন্তে কথা বলবেন।'??? মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাইডেন বা আমেরিকা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি। খুব পরিষ্কার করে বলেছে তারা বাংলাদেশে একটা সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। এটা শুধু আমেরিকা নয়, সমগ্র গণতান্ত্রিক বিশ্ব তাই বলছে।' ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ১৪তম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমান মারা যান। দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতির সফল বাস্তবায়নে এম সাইফুর রহমানের নানা সৃজনশীল পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সভাপতি প্রয়াত সাইফুর রহমানের ছেলে এম নাসের রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব সিলেট মহানগরের সভাপতি এম কাইয়ুম চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, সাখাওয়াত হোসেন জীবন বক্তব্য রাখেন। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন এর আগে সকালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতে সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতিতেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, 'অযোগ্যতা ও দুর্নীতির কারণে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একেবারে নির্বিকার। ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে বাংলাদেশ। এ বছর অতীতের রেকর্ড ভেঙে ডেঙ্গু মহামারি রূপে আবির্ভূত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বরে মৃতু্য হচ্ছে প্রধান শিরোনাম। প্রতিদিনই গড়ে প্রায় ২০ জন করে মানুষ মারা যাচ্ছে।' মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে আরও বলেন, 'নিম্নমানের কীট ও সরকারের উদাসীনতার জন্য আমরা জানি না কী পরিমাণ রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত।' ডেঙ্গু প্রতিরোধে চিকিৎসা সরঞ্জামের দাম বৃদ্ধি, দুই সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু প্রতিরোধের নামে হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন তিনি। ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রতিরোধে নেতাকর্মীদের এগিয়ে পাশে আসার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফরহাদ হালিম ডোনার, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, পারভেজ রেজা কাকন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন আল রশিদ, মহাসচিব আবদুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।