আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন হবে মন্তব্য করে দলটির নেতারা বলেছেন, আজ থেকে সেপ্টেম্বর মাস শুরু হয়ে গেছে। এই সেপ্টেম্বর মাসেই সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের ফয়সালা হবে। পতন ঘনিয়ে আসছে। আর একটি মাস কষ্ট করলেই এই সরকারের পতন হবে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চের মিলনায়তনে বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, দেশের মানুষ অধিকার চায় ও বাঁচতে চায়। আজকে যুগপৎ আন্দোলনের শপথ নেয়ার দিন। আমরা এখানে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করবো। কারণ কেউ বিদায় করে দেবে না। এটা বিএনপিকেই করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আমরা আন্দোলন করছি। প্রশ্নটা হলো আমরা গণতন্ত্র চাই। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার চাই।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার যাবে। যেতে হবে। কারণ এই লুটেরাদের নিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে রা। এটা পরিষ্কার। আমরা সুষ্ঠুভাবে সরকারের পরিবর্তন চাই। আমরা পদত্যাগ চাই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমার শারীরিক শক্তির অভাব আছে। তবে মানসিক বল ও শক্তি আছে। এই সরকারের পতন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নিঃশ্বাস যতক্ষণ আছে ততক্ষণ চেষ্টা করবো। বলে যাচ্ছি, এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত গয়েশ্বর চন্দ্র রায় চিতায় উঠবে না। জনগণকে মুক্ত করেই চিতায় উঠবো।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধান বিচারপতি উনার বিদায়ী সংবর্ধনায় বক্তব্যে বলেছেন- বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যদি রাজনৈতিক ঊর্ধ্বে উঠতে না পারে ভবিষ্যতে দেশে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে। উনি স্বীকার করে নিলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ একটি রাজনৈতিক পরিবেশে কাজকর্ম করাচ্ছে। উনার কথা থেকে তো তাই মনে হয়। যাই হোক, এটাও বার্তা। এটি বিচার বিভাগ, জনগণ এবং বিশ্ববাসীর প্রতি বার্তা যে বাংলাদেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, এদেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষা করার জন্য এখনো বিএনপি সংগ্রাম করে যাচ্ছে। আর আজকে বিএনপি এমন একটি দলে পরিণত হয়েছে যে, এই দল আওয়ামী লীগ সরকারের আতঙ্ক।
এর আগে বিকাল পৌনে ৩টা থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সংগীত অনুষ্ঠান শেষে প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। এতে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকারের দেশে বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। দেখানো হয় আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি, অত্যাচার, নির্যাতন, গুম ও খুনের তথ্য।
সভায় বিএনপি মিডিয়া সেল কর্তৃক প্রকাশিত বিশেষ সংখ্যা ‘রোড টু ডেমোক্রেসি’-এর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।