বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাফিয়া সরকারকে প্রতিহত করতে না পারলে দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবেনা। দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ১২ কোটি ভোটারের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে এই মুহূর্তে, দফা এক দাবি এক ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগ। শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে রেখে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।
শনিবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের প্রতিনিধি সভা-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান সাবেক সচিব বিজন কান্তি সরকার। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সহ অনেকে।
সভায় বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, দেশের জনগনই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস্য। জনগণ ফ্যাসিস্ট হাসিনার মাফিয়া সরকারের পরিবর্তন চায়। তবে তীব্র গণ আন্দোলন ছাড়া মাফিয়া সরকারের কবল থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে গণতন্ত্রকামি জনগণ জেগে উঠেছে। তাই আসুন, দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামুন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।
তারেক রহমান বলেন, মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান,নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী কিংবা বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী-সংশয়বাদী প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ বিশ্বাস এবং সংস্কৃতি লালন করে যেদিন এই বাংলাদেশে নিরাপদে নিশ্চিন্তে সম-অধিকার সম-মর্যাদা নিয়ে, সগৌরবে বসবাস করার মতো পরিস্থিতি হবে সেদিনই সত্যিকার অর্থে সবার সফলতা আসবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এমন একটি আকাঙ্খা নিয়েই লাখো প্রাণের বিনিমিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল, সাম্য-মানবিক মর্যাদা-সামাজিক সুবিচার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধুমাত্র একটি শ্লোগান নয় এটি একটি দর্শন। মুক্তিযুদ্ধের সেই দর্শনের আলোকে, একটি 'মানবিক বাংলাদেশ' গড়ার লক্ষ্যেই বিএনপির জন্ম হয়েছিলো।
তারেক রহমান বলেন, ৭৫ সালের ৭ নভম্বরের পর বাকশালীয় নৈরাজ্য থেকে মুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্রে ফিরেছিল বাংলাদেশ। তলাবিহীন ঝুড়ির বদনাম ঘুচিয়ে স্বাধীনতার ঘোষকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে সমাসীন হয়েছিল। এরপর আবার ২০০১ সালে সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। 'বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন' এমন কলঙ্ক থেকে বের করে এনে 'মাদার অফ ডেমোক্রেসি' বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে এশিয়ার 'ইমার্জিং টাইগারে' পরিণত করেছিলেন। সেই বাংলাদেশ এখন আবারো মাফিয়া চক্রের কবলে।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ এখন সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীন। দেশে এখন একদিকে চলছে ক্ষমতালোভী লুটেরা দুর্নীতিবাজদের উল্লাস নৃত্য। অপরদিকে সারাদেশে ধ্বনিত হচ্ছে, ক্ষুধা-মন্দা-ডেঙ্গু-বন্যায় বিপর্যস্ত, কোটি কোটি মানুষের হাহাকার। অথচ মাফিয়া সরকার-নির্বিকার।
তারেক রহমান আরো বলেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি হঠাৎ করেই এতো ভয়াবহ রূপ ধারণ করেনি। দেশে প্রতিবছরই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। কিন্তু ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনে সরকারের যে ধরণের গবেষণা এবং প্রস্তুতি থাকা দরকার, সেটি না থাকার ফলেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি বর্তমানে মহামারী রূপ ধারণ করেছে।
তিনি আরো বলেন, দেশে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি চললে জনগণের কাছে মাফিয়া সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। বরং, ফ্যাসিস্ট হাসিনার ক্ষমতালোভের কারণে বর্তমানে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান অকার্যকর হয়ে পড়েছে। দুদক কিংবা নির্বাচন কমিশনের মতো বিচার বিভাগকেও আওয়ামী লীগের সহযোগী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। বিরোধী দল এবং ভিন্নমতের মানুষকে শায়েস্তা করতে বিচার বিভাগ মাফিয়া সরকারের ইশারায় পরিচালিত হচ্ছে।
তারেক রহমান বলেন, দেশে বর্তমানে ৪৯ লাখ মামলা বিচারাধীন। এতো লক্ষ লক্ষ মামলা নিষ্পত্তিহীন থাকলেও বিরোধী দলকে ফাঁসানোর কোনো মামলা দেখলেই কোনো কোনো বিচারকের আচরণ আওয়ামী পুলিশ কিংবা আওয়ামী দলীয় সন্ত্রাসীদের চেয়েও হিংস্র হয়ে ওঠে। অথচ যেসব মামলায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা কিংবা তার মাফিয়া সরকারের ব্যর্থতা বা সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট সেসব মামলায় দুদক-পুলিশ-কিংবা আদালত নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করে।
ঢাকায় ২০১২ সালে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, চাঞ্চল্যকর এই জোড়া খুনের পর সেই সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিল, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই খুনিরা ধরা পড়বে। কারণ, সাগর রুনি হত্যা মামলা সরাসরি শেখ হাসিনা তদারক করছে। অথচ ২৪ ঘন্টা দূরে থাকে গত একযুগেও খুনিরা ধরা পড়েনি। কেন পড়েনি? জনগণ জানতে চায়।
তারেক রহমান আরো বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর এক দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও তদন্তকারীরা আদালতে সাগর রুনি হত্যা মামলার একটি তদন্ত প্রতিবেদন পর্যন্ত দাখিল করতে সক্ষম হয়নি। বরং সাগর রুনির হত্যা মামলার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আদালত এ পর্যন্ত ১০২ বার পিছিয়েছে। তারেক রহমান বলেন, জনগণ জানতে চায়, সাগর-রুনি হত্যাকান্ড নিয়ে আদালত জনগণের সঙ্গে মশকরা করছে? নাকি আদালতের সঙ্গে পুলিশ মশকরা করছে? ।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ডাকাতির ঘটনা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, স্বাধীন দেশে এ যাবৎকালে বাংলাদেশ ব্যাংকে দু'বার ডাকাতি হয়েছে। দু'বারই ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। প্রথমবার ডাকাতি হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। দ্বিতীয়বার ডিজিটাল ডাকাতি হয়েছে ২০১৬ সালে। দ্বিতীয় দফায় ডিজিটাল ডাকাতরা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড থেকে আটশো দশ কোটি টাকা লোপাট করেছে। এরপর প্রায় আট বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্তকারীরা আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকে ডিজিটাল ডাকাতি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ আদালত এ পর্যন্ত ৭৫ বার পিছিয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার মাফিয়া চক্রের অপকর্মের ফিরিস্তি এখানেই শেষ নয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে গত পনেরো বছরে, দেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী তাদের বাড়িঘর কিংবা উপাসনালয়ে অনেকবার হামলা ও ভাংচুর হয়েছে। ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে,২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর,২০১৭ সালে রংপুরের গঙ্গাচড়া ছাড়াও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ কিংবা সুনামগঞ্জের শাল্লাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে, এসব হামলা-ভাংচুরের পর উদ্দ্যেশ্যমূলক ব্লেইম গেইম ছাড়া
আজো পর্যন্ত কোনো একটি ঘটনারও সুষ্ঠ তদন্ত কিংবা বিচার হয়নি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজের দেয়া একটি প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'দেশে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর প্রতিটি হামলা ও নির্যাতনের নেপথ্য কারণ খুঁজে বের করতে আমি, সর্বদলীয়, সর্বধর্মীয় এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি 'নাগরিক তদন্ত কমিশন' গঠন করার আহবান জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো একটি ঘটনার পরও 'নাগরিক তদন্ত কমিশন' গঠন করা হয়নি' । তারেক রহমান প্রশ্ন করে বলেন, একটি হামলার ঘটনায়ও কেন বিচার হয়নি? বিচার করতে বাধা কোথায়?
তিনি আরো বলেন, একসময় একটি প্রচলিত প্রবাদ ছিল'চোর পুলিশ খেলা'। আর এখন জনগণ দেখছে 'পুলিশ-আদালত' খেলা। জনগণ জানতে চায়, এসব খেলায় কি আদালতের মর্যাদা বাড়ছে? বিরোধী দল-মত কিংবা গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে সরকারি ইচ্ছেপূরণের রায় দিয়ে নিজেদের পোস্টিং-প্রমোশনের পথ পরিষ্কার করাই কি আদালতের একমাত্র উদ্দেশ্য?
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, মাফিয়া সরকারের অপকর্ম যাতে গনমাধ্যমে প্রকাশ হতে না পারে এ কারণে নানা কালাকানুনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত করা হয়েছে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্যও ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট নামে একটি বর্বর আইন করা হয়েছিল। তবে দেশ বিদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতিবাদের মুখে বাধ্য হয়ে মাফিয়া চক্র ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট বাতিল করলেও জনগণকে ধোকা দিয়ে বোকা বানাতে নতুন করে একই কায়দায় সাইবার সিকিউরিটি এক্ট নামে একটি নতুন আইন করছে।
কথিত এই 'সাইবার সিকিউরিটি এক্ট' বাক এবং ব্যক্তি স্বাধীনতাবিরোধী উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, অবিলম্বে 'সাইবার সিকিউরিটি এক্ট' বাতিল করতে হবে। তিনি জনগনকে আস্বস্ত করে বলেন, জনরায়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মানবাধিকারবিরোধী কথিত সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করবে। গণমাধ্যমের মাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে প্রিন্টিং, টিভি এবং অনলাইন মিডিয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠন করে অগ্রাধিকারভিত্তিতে সংবিধানের ৩৯ এর ২ ধারার আলোকে একটি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ন করবে।
তারেক রহমান বলেন, সারা বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের বাক, ভাব, চিন্তা এবং বিবেকের স্বাধীনতা প্রকাশের দ্বারও অবারিত হয়েছে। সুতরাং নানারকম কালাকানুন দিয়ে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ প্রগতির অন্তরায়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গণমাধ্যম কাউকে কিছু মানতে বাধ্য করেনা। কারণ গণমাধ্যম কোনো আইন নয়, আয়না। এই আয়নায় রাষ্ট্র ও সমাজের প্রকৃত চেহারা প্রতিফলিত হয়। ফলে, ফ্যাসিষ্টরা সব-সময়ই গণমাধ্যমের আয়না থেকে নিজেদের কালিমালিপ্ত চেহারা আড়াল করতে গণমাধ্যমে'র স্বাধীনতা কেড়ে নেয়।
তারেক রহমান আরো বলেন, গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা একে অপরের পরিপূরক। গণতন্ত্র বিপন্ন হলে বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার বিপর্যয় ঘটে। বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার বিপর্যয় ঘটলে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়। আর যখন গণতন্ত্র এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা উভয়েরই বিপর্যয় ঘটে তখনই দেশ ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে। বর্তমানে দেশের জনগণ ফ্যাসিস্ট হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসন শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট।
তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময়ই নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে তাদের হীন রাজনৈতিক দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। তিনি দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান তথা ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, 'আপনার কিংবা আপনাদের ধর্মীয় পরিচয়কে আওয়ামী লীগ যেন তাদের নিজেদের হীন দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ভূখণ্ডে যাদের বসবাস, প্রত্যেকের আলাদা ধর্মীয় বিশ্বাস কিংবা সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট থাকতে পারে কিন্তু সকলের একটি সর্বজনীন পরিচয় 'আমরা বাংলাদেশী' ।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তরুণ দে’র সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ফ্রন্টের নেতা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, আ্যালবার্ট পি কস্টা, অপর্ণা রায় দাস, সুশীল বড়ুয়া এবং জন গোমেজসহ অনেকে।
সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চলমান আন্দোলনে জয়ী না হলে বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ‘কর্তৃত্ববাদী শাসনের হাতে চলে যাবে। সেজন্য দেশের তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনাদের ছড়িয়ে পড়তে হবে কমিউনিটিসহ সকল মানুষের মধ্যে...তাদের বোঝাতে হবে যে এই গণতন্ত্র লড়াইয়ে আমাদের জয়ী হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই।”
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আজকে আপনারা দেখছেন, কীভাবে এই সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য কাজ করছে। আমাদের যে ন্যূনতম অধিকার, সেই অধিকারগুলো তারা কেড়ে নিচ্ছে। দেখুন বড় দুঃখজনক ব্যাপার যেটা, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনও গৃহবন্দি হয়ে আছেন।
দেশের জনগণ ‘নিরাপদ নয়’ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “আজকে এদেশে কেউ নিরাপদ বোধ করে না। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কেউ না। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ নিরাপদ বোধ করে না। কখন কাকে মিথ্যা মামলা জড়িয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে কী বিপদে ফেলবে…গুম হয়ে যাচ্ছে, ৬০০ এরও অধিক গুম হয়ে গেছে।
“ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে আপনাদের কমিউনিটির বহু লোককে আসামি করেছে। এই সব করে দাবিয়ে রাখা যাবে না।”