image

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের সমালোচনা করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সময়ে এ রায়টা কেন? মূলত দেশের মানুষ যখন পরিষ্কার করে ঘোষণা দিয়েছে এখন আর অন্য কোনো দাবি নয়, দাবি আপনার পদত্যাগ- ঠিক তখনই একদফা দাবির আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্যই এই রায়। 

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। ‘তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি সাজার প্রতিবাদে এবং ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে’ এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভোটের আগে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। এটা এখন বিরোধী সব দলই চাইছে। আর জনগণ এখন একত্রিত, সব রাজনৈতিক দল আজকে এক হয়ে গেছে। যারা যুগপৎ আন্দোলন করছে তারা, যারা যুগপৎ আন্দোলন করছে না, তারাও।

তিনি বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখবেন, কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) একটা স্টেটমেন্ট দিয়েছে, এই সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। চরমোনাই পীর সাহেব দিয়েছেন। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো বলছে পরিষ্কার করে, আমরা এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকার যারা জনগণের ভোটে বিশ্বাস করে না, যারা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে না, যারা জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালায়, তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন বাড়ার চিত্র তুলে ধরে ফখরুল বলেন, এখনই পেটাতে শুরু করছে, এখনই গুলি করতে শুরু করেছে, এখনই রাতে বাড়িতে থাকতে দেয় না। মিথ্যা মামলার ওয়ারেন্ট নিয়ে হাজির হয়। হাইকোর্টে জামিনের জন্য গেছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ সাহেব, বাসায় যেতে পারেননি, রাস্তার মধ্যে থেকে তুলে নিয়ে গেছে! 

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, এখন আমরা যে যুদ্ধে নেমেছি, যে সংগ্রামে নেমেছি, এটা বিএনপি’র যুদ্ধ নয়, বিএনপি’র সংগ্রাম নয়, তারেক রহমানেরও নয়, মির্জা আলমগীরেরও নয়। এই যুদ্ধ এদেশের ১৮ কোটি মানুষের।

তার স্বাধীনতা রক্ষা করার, তার ভোটের অধিকার রক্ষা করার, তার বেঁচে থাকার অধিকার রক্ষা করার। 

সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রশাসনের ভাইদের, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ভাইদের, বিচার বিভাগের ভাইদের বলবো যে, আপনাদের যে সুনির্দিষ্ট কোড আছে, যে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব সংবিধান অনুযায়ী, সেই কাজ করবেন। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবেন না।

ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের শহীদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক আল মোজাদ্দেদী আলফে ছানী, বিএনপি’র স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. মো. মেহেদী হাসান, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, আলমগীর হাসিন আহমেদ, প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম, আসাদুজ্জামান চুন্নু, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ওদিকে বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের মিডল স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে পতন ঘটানো হবে। আপনাদেরকে নো বলে কিংবা এলবিডব্লিউ দিয়ে আউট করবো না। বরং মিডল স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে পতন ঘটানো হবে।

তিনি বলেন, আজকে অনেকেই বলছেন, ডা. জোবাইদা রহমান তো রাজনীতি করেন না। তো মামলা কেন? তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদার বিরুদ্ধে রায় সরকারের আক্রোশের প্রতিফলন। আমি এই রায় অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, অধ্যাপক ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. এএসএইচ পারভেজ, অধ্যাপক ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. শহিদুল ইসলাম বাবুল, ডা. মনোয়ারুল কাদির বিটু, ডা. নিয়াজ শেখ রানা, ডা. আদনান হাসান মাসুদ, ডা. মো. ইয়াহিয়া, ডা. আবু নাসের, ডা. এম এ কামাল, ডা. এসএম মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. একেএম মহিউদ্দিন ভূঁইয়া মাসুম।