image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে আর নির্বাচন হবে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। এজন্য আন্দোলন ছাড়া সামনে আর পথ খোলা নেই। কোনো দেশের ভিসানীতিতে কী আছে, না আছে, দেখতে চাই না। জনগণের শক্তিতে আন্দোলন করছি। এ আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। এ আন্দোলন দেশকে রক্ষা করার, দেশের মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনি পেশাজীবীদের এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

সমাবেশ শেষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে একটি নীরব পদযাত্রা বের করা হয়। পদযাত্রাটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে আইনজীবী, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন পেশার নেতারা অংশ নেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কয়েক দিন আগে হুমকি দিয়েছে, ২০১৩ সালের মামলাগুলো আবার শুরু করা হবে। সবাইকেই শাস্তি দেওয়া হবে, এভাবে বলেন তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা)। ময়লার ট্রাক পুড়িয়েছি, বোমা মেরেছি, এগুলো করতে হুকুম দিয়েছি- এসব মিথ্যা অভিযোগে মামলা। আইন মন্ত্রণালয় থেকে জেলা পর্যায়ের বিচারকদের বলা হয়েছে, মামলা ২ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। বিএনপির যারা নেতা আছেন, যারা নির্বাচন করতে পারেন, দ্রুত তাদের সাজা দিয়ে ভেতরে ঢোকাতে হবে। এদের সঙ্গে আপস? এদের অধীনে নির্বাচন?’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১২ জুলাই আওয়ামী লীগ সমাবেশ করল, তাতে ৫০ হাজার লোকও হয়নি। বিএনপির সমাবেশে লাখো লাখো মানুষ। অথচ অদৃশ্য জায়গা থেকে গণমাধ্যমকে বলা হলো, যেন এমনভাবে নিউজ করে, যাতে দুদলকে সমান দেখায়। টেলিভিশনে লাইভও করতে দেওয়া হয়নি।’

দেশ চরম ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই ক্রান্তিলগ্ন জাতির অস্তিত্বের। জাতি হিসেবে স্বকীয়তা রক্ষার। বেআইনিভাবে, সংবিধান লঙ্ঘন করে ও রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অবৈধভাবে সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে। সচেতনভাবে ও সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। জনগণকে কিভাবে বোকা বানিয়ে সব নিয়ে নেওয়া যায়, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ আওয়ামী লীগ।’

সরকার জনগণকে উন্নয়নের বায়োস্কোপ দেখাচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার জাতিকে উন্নয়নের বিভ্রম দেখাচ্ছে। বায়োস্কোপে যেমন দেখায়, সেভাবে টানেল, ফ্লাইওভার, ভবন দেখাচ্ছে। অথচ সাধারণ মানুষের ঘরে ছাদ নেই। দেশের এমন উন্নয়ন হয়েছে, যার উপরে টাই, কিন্তু পায়ে জুতা নেই।’

তিনি বলেন, ‘তরুণ, পেশাজীবী, মেহনতি মানুষ জেগে উঠেছে। এখন পেশাজীবীদের জেগে উঠতে হবে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তাই সবাই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসুন, কাজ ছেড়ে রাস্তায় নামুন। মানুষকেও রাস্তায় নামতে উদ্বুদ্ধ করুন। আর রাস্তায় নেমে জনগণের শক্তি দিয়েই আমরা এদের পরাজিত করব।’


‘প্রশাসনে নগ্ন দলীয়করণ, জেল-জুলুম, গুম-খুন বন্ধ, সীমাহীন দুর্নীতিতে জর্জরিত, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন’সহ বিভিন্ন দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, এমএ আজিজ, আব্দুল হাই শিকদার, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসললাম রিজু, ইউনির্ভাসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক জিকে মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের খান মো. মনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।