সরকারকে আবারও পদত্যাগের আহবান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এ সরকারকে বিদায় জানাব। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব এই নির্বাচন চাই।
আজ শুক্রবার বিকালে নোয়াখালীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে 'দেশ বাঁচাতে মেহনতী মানুষের পদযাত্রা' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আলমগীর বলেন, '২০০৮ সালে সবাইকে বোকা বানিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ২০১৪ সালে তারা প্রহসনের নির্বাচন করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিরপেক্ষ করার কথা বলে ভোটের আগের রাতেই ভোট ডাকাতি করেছে। তারা ক্ষমতায় গিয়ে পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান বাতিল করে দেন। কেন, আবার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে? কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে, নিরপেক্ষ সরকার থাকলে, নির্দলীয় সরকার থাকলে আওয়ামী লীগের ভাত নেই।'
এক দফা এক দাবির স্লোগান তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারকে বিদায় জানাব। দেশের কৃষককূল কষ্টে আছে। ৩০০ টাকা বস্তার সার এখন ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভোটের আগে ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর কথা বলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে আওয়ামী লীগ। বর্তমানে চালের কেজি ৯০ টাকা।'
'সর্বত্র তাদের খবরদারি চলছে। শুক্রবারে মসজিদে পুলিশের মাধ্যমে ইমামদেরকে খুতবা পরিবর্তনের চাপ দিচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে ঢুকিয়েছে। অনেক লোককে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। আজকে খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তারেক রহমানকে নির্যাতন করে তার মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এসব থেকে মুক্তি চাই।
'আওয়ামী লীগ বলছে- শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ভোটগ্রহণ চায়। কী আবদার? তিনি বলেন- শিয়ালের কাছে কুমিরের বাচ্চা দিলে যা হয়। এ সরকারের আমলে নির্বাচন সেরকমই হবে। তাই আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়,' বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, 'তিনি বলেন ২০১৮ সালে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার অপরাধে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে একটি নারীকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় বিশ্বের বিবেক নড়েচড়ে উঠেছিল। বর্তমান সরকার জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তাই দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।'
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আবারও বলছি সময় থাকতে পদত্যাগ করুন। সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচন দিন।'
বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষকদল, শ্রমিকদল, মৎসজীবীদল, তাঁতীদল ও জাসাসের উদ্যেগে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। এ পদযাত্রায় বৃহত্তর নোয়াখালীর ৫ জেলার নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীমসহ আরও অনেকে।
আজ শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে সমাবেশ শেষ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম থেকে পদযাত্রা করে বেগমগঞ্জের একলাশপুর যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। সেখান থেকে তিনি ঢাকার উদ্দেশে সড়ক পথে তিনি নোয়াখালী ত্যাগ করেন।