image

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ভয় দেখিয়ে, গুম করে, জোর করে, বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছে, মানুষের ভোটে না। এই মন্তব্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, ‘এখন সময় এসেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা এই বয়সেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছি, আপনাদেরও দাড়াতে হবে।


শুক্রবার (১৬ জুন) বিকালে সিরাজগঞ্জ সরকারি ইসলামিয়া কলেজ মাঠে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে মামলার রায়ের প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব বলেন।


ফখরুল বলেন, আমাদের ৬০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের ২৭ জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে বার বার জেলে দেওয়া হয়। তারা ইচ্ছেমতো বিদ্যুৎ এর দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা উন্নয়নের কথা বলেন কিন্তু বড় বড় মানুষ বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করায়, কিন্তু দেশের মানুষের ভালো চিকিৎসা পাওয়ার যায়গা নাই।


বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা পুলিশকে ব্যবহার করে সমাবেশে বাধা দেন। কিন্তু আমি পুলিশকে আজকের প্রোগ্রামের জন্য ধন্যবাদ দেই, পুলিশ আজকের মতো আগামীতেও প্রোগ্রাম সফল করতে সহযোগিতা করবেন। তিনি আরও বলেন, তারা দেশকে নিজের সম্পদ মনে করেন কিন্তু এই দেশ শুধু আওয়ামী লীগের নয়, এই দেশ কৃষকের, সাধারণ নাগরিকের, পুলিশের, এই দেশ সবার।


মির্জা ফখরুল বলেন, উন্নয়ন বলতে শুধু উড়াল সেতু বোঝায় না। উন্নয়নের কথা বলে বিদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে এসে আমাদের পকেট কাটা হয়। এই সরকার শুধু ভোট চোর নয়, এই সরকার সবকিছুর চোর। এই আওয়ামী লীগ সুচিন্তিতভাবে এই দেশটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।


বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষনেতা বলেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও আমান উল্লাহ আমানের রায় অন্যায়ভাবে দেওয়া হয়েছে। এই সরকার অবৈধভাবে বুকের উপর চেপে বসে আছে। এই সরকার নিশি রাতের সরকার। আওয়ামী লীগ ভোট চোর।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির ব্যাপারে বলেন, ভিসানীতিতে এখন পরিষ্কার যে এই দেশে যারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘কথা টা তাদের খুব লেগেছে।’


মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের তত্বাবধানে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। আমাদের নেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এটা আমাদের জীবন মরনের প্রশ্ন, বাংলাদেশের সম্মানের প্রশ্ন। আমরা প্রতিহিংসা, সহিংসতাতে বিশ্বাস করি না।


জনসভায় সিরাজগঞ্জের নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতির বিষয়ে বলেন, আজ সিরাজগঞ্জে আপনারা নতুন আশা দেখিয়েছেন, সিরাজগঞ্জের মানুষ সবসময় বীর যোদ্ধা। আজ সিরাজগঞ্জের মানুষ জেগে উঠেছে।


বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু'র সঞ্চালনায় এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি রোমানা মাহমুদ এর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ ও গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম।


প্রতিবাদ সমাবেশে জেলা বিএনপি ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠন এবং সকল উপজেলা বিএনপি এবং অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।