বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বর্তমান অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী গুম-খুন হয়েছেন। কারও ছেলে কারও মেয়ে তাদের বাবার মুখ দেখেনি। তারা এখন তাদের বাবার কবরটা দেখতে ও জিয়ারত করতে চায়। তারা সেই সুযোগও পাচ্ছে না। এটা একটি অনিশ্চিত বিষয়। তারা মারা গেছে নাকি বেঁচে আছে? এটাও জানার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আজকে যারা গুম-খুন মিথ্যা ও গায়েবি মামলার জন্য দায়ী তাদের বিচার কিন্তু হবে। তাদেরকে প্রত্যেকটি ঘটনার এবং এতো দীর্ঘ সময়ের প্রত্যেকটা ঘন্টার হিসাব দিতে হবে। শুধু দেশে নয়, প্রয়োজনে এটার আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থায় বিচার হবে। আগামীতে সব গুম-খুনের বিচার করা হবে। তা না হলে আগামীতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) উদ্যোগে গুম-খুন, নির্যাতিত, অসহায় ও অসচ্ছল নেতাকর্মীদের সন্তানদের জন্য জেডআরএফ’র রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির তত্ত্বাবধানে দেশব্যাপী জেলাভিত্তিক শিক্ষা উপবৃত্তি-২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি সংঘাত নয়, শান্তিতে বিশ^াসী। বিএনপি গণতন্ত্র ও আইনের শাসন চায়। সেজন্য প্রয়োজনে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যারাই গুম-খুন ও মিথ্যা-গায়েবি মামলায় জড়িত তাদের বিচারে আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় রাখা হবে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থাকে এই বিচারে সম্পৃক্ত করা হবে। যার ভিত্তিতে আগামী সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পরিচালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে বিএনপির গুম খুনের শিকার পরিবারগুলোর আর্তনাদ বলার মতো না। এসব কারণেই তো বহির্বিশ^ আগামীতে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। আজকে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যে উদ্যোগে নিয়ে গুম-খুনের শিকার পরিবাগুলোর পাশে এগিয়ে এসেছে তা অত্যন্ত প্রশংসার যোগ্য। আসলে পরিবারের কাউকে হারালে যে ক্ষতি হয় তা পোষানো যায় না।
আমীর খসরু বলেন, রাজনীতিতে আজকে মানবতা নেই। এখন রাজনীতি কলঙ্কিত। বিশেষ করে যে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতা নেই সেখানে মানবতাও নেই। আজকে রাজনীতিতে মানবিকতা ফিরিয়ে আনতে হবে। স্বৈরাচার সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আরও বেশি মানবিক হতে হবে।
জেডআরএফ’র শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্প উপকমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, জেডআরএফ’র রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী, রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ ও সদস্যসচিব ডা. পারভেজ রেজা কাকন। এসময় জেডআরএফ’র ডা. এএইচএস হায়দার পারভেজ, অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, জহিরুল ইসলাম, ডা. আবু নাসের, অধ্যাপক ডা. একেএম মাসুদ আখতার জীতু, অধ্যাপক ড. মো. ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার, অধ্যাপক মতিউর রহমান গাজ্জালি, অধ্যাপক জাকির হোসেন জামাল, মিসেস শামীমা রহিম, কৃষিবিদ মিথুন তালুকদার প্রমুখ।