দেশে এখন অলিখিত বাকশাল চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ৭৫ সালে যখন বাকশাল সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়, সে সরকার সমালোচনার পথ রুদ্ধ করতে সরকারি দুটি পত্রিকা বাদে বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। আর আজ বাংলাদেশে অনেক সংবাদপত্র থাকা সত্ত্বেও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে পারে না। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপি মিডিয়া সেল কর্তৃক আয়োজিত গণমাধ্যমের কালো দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাকশাল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র রহিত করা, একটি একদলীয় শাসন কায়েম করা। তার খড়গ পড়েছিল সংবাদপত্রের ওপরেও। অনেক সাংবাদিক তখন বেকার হয়েছিল, ফুটপাতে ব্যবসা করতে বাধ্য হয়েছিল। এরপর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। তৈরি করেন প্রেস ক্লাব, প্রেস কাউন্সিল, প্রেস ইন্সটিটিউট। তারই ধারাবাহিকতায় দেশে আজ এতো মিডিয়া।
তিনি বলেন, বুধবার একজন সাংবাদিককে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ করায় হত্যা করা হয়েছে। কেবল গত ১৪ বছরেই ৫৯ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।সাগর-রুনি হত্যার পুলিশি প্রতিবেদন ১০০ বার পিছিয়েছে। এসবের কারণে সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, এর ফলে সরকারের যারা সিন্ডিকেট রয়েছে, তারা নির্ভয়ে দুর্নীতি করতে পারছে। দেশে দ্রব্যমূল্য আজ লাগামছাড়া। মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। জ্বালানির অভাবে লোডশেডিং বেড়েছে। ব্যাংকগুলো আজ দেউলিয়া, ডলার-পাউন্ডের সংকট। আইন করে বিদ্যুতের ওপর ইনডেমনিটি বসিয়েছে। অথচ কমার্শিয়াল সেক্টরের ওপর ইনডেমনিটি বসানোর কোনো নিয়ম নেই। এসবই সীমাহীন দুর্নীতির ফল।
মোশাররফ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ঘোষণার পর সরকার বেসামাল হয়ে গেছে। সরকারের মন্ত্রীরা একেক সময় একেক কথা বলছে। কারণ জনগণের আন্দোলনে সরকার আজ ভীত। এই সরকারকে বিদায় করাই এখন জনগণের একমাত্র লক্ষ্য। সহসা বিদায় না নিলে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে সহ তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরীর পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাবির সাবেক ডীন বোরহান উদ্দিন খান, সাংবাদিকরমুখ বক্তব্য রাখেন।