image


নির্বাচনে ‘কারচুপি’ করতে সরকার এখন থেকেই প্রশাসন ‘সাজাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


ক্ষমতাসীনদের সতর্ক করে তিনি বলেছেন, “আজীবন ক্ষমতায় থাকার এহেন পরিকল্পনা… অতীতে ফেরাউন চেয়েছিল, নমরুদও চেয়েছিল, এরশাদ সাহেবও চেয়েছিল। তারা পারেনি।”


‘সংবাদপত্রের কালো দিবস’ পালনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তব্য আসে।


১৯৭৫ সালের ১৬ জুন চারটি পত্রিকা রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেজন্য সাংবাদিকদের একটি অংশ দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে।


মির্জা ফখরুল অনুষ্ঠানে বলেন, “ওরা (আওয়ামী লীগ) নির্বাচন কিন্তু শুরু করে দিয়েছে। আরেকটি নির্বাচন। রিগিং করতে হবে, সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হবে… শুরু করে দিয়েছে। কয়েকটা পত্রিকায় রিপোর্ট বেরিয়েছে যে পুলিশের ব্যাপক রদবদল, ব্যাপক পদোন্নতি…। গতকাল যে কাজটি করা হয়েছে, সচিবদেরও রদবদল, অর্থাৎ প্রশাসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে।


“একটাই উদ্দেশ্য, নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা তাদের মত করে সব কিছু সাজিয়ে তু্লছে।… বাকশালও করেছেন আপনারা সব কিছু সাজিয়ে। পারেন নাই।”


বিএনপি মহাসচিবের ভাষায়, এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে এখন একটাই পথ, সেটা হল রাস্তায় নামা।

“রাস্তায় নেমে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে জোরদার-বেগবান করতে হবে। গতকাল আমার যেটা মনে হয়েছে, (চট্টগ্রামে বিএনপির আয়োজনে তারুণ্যের সমাবেশে) সমুদ্রের সেই উত্তাল তরঙ্গের মত ঝড়-তরঙ্গ সৃষ্টি করে সেটাকে ভেঙে দিতে হবে।সকলকে আজ উঠে দাঁড়াতে হবে।


“তাহলেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মানুষের স্বাধীনতা, ভোটের স্বাধীনতা, আমার যে স্বাধীনতা, আমার যে আত্ম, যে কারণে আমরা যুদ্ধ করেছি… সত্যিকার অর্থে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, একটা মুক্ত সমাজ তৈরি করা। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই অতি দ্রুত যার যার অবস্থান নিয়ে সেই কাজটা পালন করি।”  


সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’ প্রয়োগ করছে সংবাদপত্র ও ভিন্নমতকে ‘দমন করছে’ বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।


তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের যে বডি কেমিস্ট্রি, সেই বডি কেমিস্ট্রিতে তারা কখনোই ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না। আপনি কোথাও যাবেন, কীভাবে চিনবেন আওয়ামী লীগকে? দেখবেন যে জোরে জোরে কথা বলছে, টেবিলটা চাপড়াচ্ছে, বুঝবেন সে আওয়ামী লীগ করে।”



“আপনি পুলিশের কাছে যাবেন, সেখানে অভিযোগ লেখাতে পারবেন না, আপনি কোর্টে যাবেন, সেখানেও আপনি কোথাও বিচার পাবেন না। এজন্য এই সরকারকে সরাতে হবে, সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”


সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।


জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফোরামের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন ঠাকুরের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর শিকদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাংবাদিক নেতা এম এ আজিজ, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য গনি চৌধুরী চৌধুরী বক্তব্য দেন।