গণতন্ত্র হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার : মির্জা ফখরুল

গণতন্ত্রকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (২৬ আগস্ট) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে শুভেচ্ছা বিনিয়ম অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দেশে ‘ঘোর অমানিশা’ চলে উল্লেখ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ঘোরতর অমানিশা চলছে। মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হয়েছে, মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমাদের যে প্রিয় স্বাধীনতা, যে স্বাধীনতার চেতনা ছিলো, যে চেতনায় আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সেই চেতনার সমস্ত বিষয় ধ্বংস করে দিয়েছে গণতন্ত্রকে হরণ করে দিয়ে। এই সরকারের আমলে একদিকে গণতন্ত্রকামী মানুষ নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছে, অন্যদিকে ভিন্নমতাবলম্বীরা নির্যাতিত হয়েছে। আরেকদিকে বিভিন্ন ধর্মের লোকজন তারাও নির্যাতিত হয়েছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বর্তমান সরকারের আমলে নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা জানি কিভাবে আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করা হয়েছে, কিভাবে তাদের নির্যাতন করা হয়েছে। আজকেই কিছুক্ষণ আগে সুশীল বাবু বললেন যে, ফেনীতে যাওয়ার পথে বৌদ্ধ পুরোহিত অমৃতা নন্দ ভিক্ষুকে হত্যা করে গোমতি নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। দেখেছি যে, কিভাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধমের্র মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে। মানুষের কল্যাণের জন্য, দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থেকে যে আন্দোলন করছেন আজকে আমাদের সকলকে সেই আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শরিক হতে হবে। সত্যিকার অর্থেই একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানের শুরুটা করেছিলেন আমাদের দলের চেয়ারপারসন ১১৬ কোটি মানুষের নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে নেই। তাঁকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে এই সরকারের নির্যাতনের ফলে তিনি দীর্ঘ ১৬ মাস কারা অন্তরীণ হয়ে আছেন। আমাদের এদেশে ২৬ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমাদের এই রাষ্ট্রের এক লাখের ওপরে মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র এই অপরাধে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার অপরাধে। আমাদের ৫শ’র বেশি মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে, নিখোঁজ হয়ে গেছে। সেখানে হিন্দু নেই, মুসলমান নেই, বৌদ্ধ নেই, খ্রিষ্টান নেই। একমাত্র তাদের অপরাধ তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চায়, তারা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাশ অপুর পরিচালনায় শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়–য়া, বিজন কান্তি সরকার, কেন্ত্রীয় নেতা জয়ন্ত কুন্ড, অপর্না রায় দাশ, জন গোমেজ, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, মিল্টন বৌদ্ধ, তরুন দে, সুশীল বড়–য়া, রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী হরিপ্রমা নন্দ মহারাজ, ইসকনের দ্বিজমনি গৌরান্দ দাশ ব্রহ্মচারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম, পিরোজপুর, গাজীপুর, নেত্রকোনা বরিশাল, নাটোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা অংশ নেন।
Torna su