গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য অংশ গ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে পরিচালিত হওয়া অত্যন্ত জরুরী। সেই লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে নিম্ন বর্ণিত দাবী সমূহ পূরণ করতে হবে :-
১. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার
২. জাতীয় সংসদ বাতিল করা
৩. সরকারের পদত্যাগ ও সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা
৪. যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পূনগঠন করা এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার বিধান নিশ্চিত করা
৫. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ম্যাজেস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্রবাহিনী নিয়োগ নিশ্চিত করা
৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষনে তাদের উপর কোনো প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ না করা
৭. ক) দেশের বিরোধী-রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর মুক্তি, সাজা বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার
খ) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনী ফলাফল চূড়ান্ত ভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সকল রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনো ধরনের মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা
গ) পুরনো মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার না করার নিশ্চয়তা
ঘ) কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিকসহ সকলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা।
আমাদের লক্ষ্য :
১. রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে একটি ন্যায়ভিত্ত্বিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করা।
২. রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দলীয়করণের ধারার বদলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আইনেরশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
৩. রাষ্ট্র ক্ষমতায় গ্রহণযোগ্য ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা।
৪. স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারক নিয়োগ এবং বিচারবিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা।
৫. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ দেশপ্রেমিক স্বশস্ত্র বাহিনীকে আরও আধুনিক, শক্তিশালী ও কার্যকর করা।
৬. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
৭. কঠোর হস্তে দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ও অধিকতর কার্যকর করা।
৮. সকল নাগরিকের জান মালের নিরাপত্তা ও মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করা।
৯. “সকলের সাথে বন্ধুত্ব এবং কারো সাথে বৈরীতা নয়’’ এই মূলনীতিকে অনুসরণ করে জাতীয় মর্যাদা ও স্বার্থ সংরক্ষণ করে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরন করা। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ সমূহের সাথে পারস্পরিক এবং সৎপ্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্ব ও সমতার ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, বিনিয়োগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
১০. কোনো ধরণের সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় না দেয়া এবং কোনো জঙ্গী গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করতে না দেয়া।
১১. ক) নিম্নআয়ের নাগরিকদের মানবিক জীবন মান নিশ্চিত করা, দ্রব্যমূল্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বেতন-মজুরিনির্ধারণ ও আয়ের বৈষম্যের অবসানকল্পে সমতা ভিত্তিক নীতি গ্রহণ করা এবং সকলের জন্য কর্মসংস্থান, শিক্ষিত বেকারদের জন্য বেকার-ভাতা, সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ও পর্যায়ক্রমে স্বাস্থ্যবীমাচালু, কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরা, শিল্প-বাণিজ্য ও কৃষিরসম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত ও আধুনিককরা।
খ) স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত অবৈতনিক এবং উচ্চশিক্ষা সহজলভ্য করার লক্ষ্যে জীবন মুখী শিক্ষানীতি চালু করা, প্রযুক্তি বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে মানব সম্পদের উৎকর্ষ সাধনকরা, জাতীয় উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
গ. তৈরি পোষাক শিল্পের অব্যাহত উন্নয়ন এবং শিল্প ও রফতানী খাতকে বহুমুখী করা, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে উন্নয়নের ধারাকে গ্রামমুখীকরা, বৈদেশিক কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ, ঝুঁকিমুক্ত ও প্রবাসী জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং তরুণ প্রজন্মের প্রতিভার বিকাশ ও তাদের আধুনিক চিন্তা চেতনাকে জাতীয় উন্নয়নে কাজে লাগানোর জন্য শিক্ষা, তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া।
১২. সকল প্রতিহিংসার রাজনীতির অবসানে জাতীয় ঐক্যমত গঠনকরা।