বাণী
“শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে আমি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নির্ভীক সৈনিক শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে একটি অবিস্মরণীয় নাম। রক্তঝরা ঐ আন্দোলন ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র পূণঃপ্রতিষ্ঠার। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধাী গণআন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে গিয়ে শহীদ জেহাদ পুলিশের বুলেট নিজের বুকে বরণ করে নেন। শাহাদাত বরণ করেন এই অকুতোভয় ছাত্রনেতা। তার রক্ত স্রোতের ধারা বেয়েই সে বছর সংঘটিত হয় গণঅভ্যূত্থান, পতন হয় স্বৈরশাসক এরশাদের ।
গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল স্বৈরশাসক এরশাদ। গণতন্ত্রকে পূন:প্রতিষ্ঠা এবং দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করানোর দৃঢ়-প্রত্যয় নিয়েই জেহাদ নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আমরা তার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে না পারলে তার আত্মা কষ্ট পাবে। বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠী মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে মৃতপ্রায় করেছে। ক্ষমতা জবরদখলকারী সরকার রাষ্ট্রের সকল স্তম্ভকে ধুলায় মিশিয়ে দিতে সার্বিক আক্রমণ শুরু করেছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মী, ভিন্নমত ও বিশ্বাসের ব্যক্তিদের পাশাপাশি গুম করা হচ্ছে মানুষের বাক-ব্যক্তি ও নাগরিক স্বাধীনতা। বিএনপি চেয়ারপার্সন গণমানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করার মাধ্যমে ইতিহাসের মাৎস্যন্যায় বিভৎস্য আগ্রাসী চেহারায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
গণতন্ত্রের ধারা বহমান রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অপরিহার্য শর্ত হলো নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রীর মুক্তি নিশ্চিত করা। আর এজন্য আমাদের আরও সাহসী সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে। গণতন্ত্র মানে শুধুমাত্র নির্বাচন নয়, গণতন্ত্র মানে মানুষের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। আজ জনসাধারণের বুকের ওপর অগণতান্ত্রিক অপশক্তি ভারী পাথরের মতো চেপে বসে আছে। তাই শহীদ জেহাদের আত্মত্যাগের প্রেরণাকে বুকে ধারণ করেই দেশী-বিদেশী অপশক্তির চক্রান্ত প্রতিহত, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে সক্ষম হবো।
আল¬াহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”
শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেন-
বাণী
“শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে গণতন্ত্র পূণঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রসেনানী শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ও তাঁর অম্লান স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে এক চিরস্মরণীয় নাম। শহীদ জেহাদ নিজেকে উৎসর্গ করেছেন গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে। তাঁর এই মহিমান্বিত আত্মদানের ফলেই স্বৈরশাহী এরশাদের পতন হয়। শুরু হয় সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্রের বিজয়ে তাঁর অগ্রণী ভূমিকার জন্য জাতি হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি।
কিন্তু অগণতান্ত্রিক অপশক্তি নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে নেই। এখন সেই পুরনো স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদের সাথে মিলেমিশে নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে জনগণকে দুঃস্বপ্নের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। দুর্বিনীত শাসনকে স্থায়ীত্ব দেয়ার জন্য এসময়ের বিপুর জনপ্রিয় নেত্রী ‘গণতন্ত্রের মা’ বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তারা চক্রান্তের কুটীল খেলায় রাষ্ট্রীয় গণতন্ত্রকে চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করার জন্যই দেশনেত্রীকে আটক করে রেখেছে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বর্তমান দুঃসময়ে নিষ্ঠুর দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে কঠিন সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করবে শহীদ জেহাদের আত্মদান। যে স্বপ্ন ও আশা নিয়ে শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদ সেদিন স্বৈরাচারীর বুলেট নিজের বুকে বরণ করে নিয়েছিলেন, সেই স্বপ্ন পূরণে রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমাদের আজকের সংগ্রামের মূল লক্ষ্য। আর তাতেই শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের আত্মা শান্তি পাবে।
আল¬াহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”
(এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী)
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।